হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু ঠেকাতে বড় পদক্ষেপ জেলা প্রশাসনের, চালু গ্রিন করিডর সিস্টেম
এই সময় | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য শুরু হতে চলেছে গ্রিন করিডর। জেলায় হৃদরোগে মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। এরজন্য পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর সমস্ত ব্লক হাসপাতাল ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি কার্যকর করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছরে কম বয়সীদের মধ্যে ব্রেন স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা অনেকটা বেড়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও এই রোগে আক্রান্তের পরিসংখ্যাটা নেহাত কম নয়। অনেকক্ষেত্রেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তবে, চিকিৎসকদের কথায়, আক্রান্ত হওয়ার পর দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা শুরু করা গেলে মৃত্যু হাত থেকে রক্ষা করা যায়। ফলে জেলার কোথাও ব্রেন্ড স্ট্রোকে বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটলে রোগীকে দ্রুত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করার জন্য পুলিশের সহযোগিতায় গ্রিন করিডরের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এক্ষেত্রে জেলার কোথাও হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত রোগীকে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানের চিকিৎসক বিষয়টি জেলা হাসপাতালে জানাবেন। জেলা হাসপাতালের নির্দেশ মতো রোগীকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে। এরজন্য স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে বিষয়টি থানায় জানানো হবে।এরপরেই গ্রিন করিডরের মাধ্যমে রোগীকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে নিয়ে আসার পর চিকিৎসকরা তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে টেলি মেডিসিন পরিষেবার মাধ্যমে বাঙুর হাসপাতালে পাঠাবেন। সেখানকার চিকিৎসকদের নির্দেশ মতো রোগীর চিকিৎসা শুরু করা হবে।জেলার সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী জানান, জেলায় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে এই পরিষেবা শুরু হয়েছে। জেলাজুড়ে স্থায়ীভাবে এই প্রক্রিয়া চালু করার চেষ্টা চলছে।অনেক সময় স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো থাকে না পরীক্ষা করার। ফলে চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হওয়ায় রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটে। এই ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে পরিষেবা প্রদান করা হবে।এই প্রসঙ্গে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তুভ নায়েক বলেন, ' কয়েক বছর আগেই বর্ধমান মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে ব্রেন ডেথ নিয়ে উন্নত পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এই চিকিৎসাকে বলা হয় 'থ্রোম্বসিস'। মেডিসিন বিভাগের অধীনে প্রতিদিনই এই চিকিৎসা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকছেন। কিন্তু, একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, আক্রান্ত হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই রোগীকে হাসপাতালে আনতে হবে।’