বর্জ্য দিয়ে তৈরি নিপুণ শিল্পকর্ম, ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসের স্বীকৃতি হলদিয়ার পবিত্রর
এই সময় | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বর্জ্য পদার্থ সবসময় ফেলে দেওয়ার জিনিস নয়। শিল্পীর দক্ষতায় সেই বর্জ্য পদার্থ থেকেই গড়ে নিপুণ শিল্পকর্ম। সেরকমটাই করে দেখালেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পবিত্র দাস। বর্জ্য দিয়ে হস্তশিল্প তৈরি করে ইন্ডিয়া ও আমেরিকা বুক অফ রেকর্ডসে নাম তুললেন শিল্পী।ফেলে দেওয়া প্রতিদিনের ব্যবহারিক বর্জ্য দিয়ে হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হল বিনোদনের বস্তু। ফুলের তোড়া থেকে দেওয়ালে ঝোলানো রাধাকৃষ্ণের ছবি। দেখামাত্র চোখ টেনে নেবে বইকি। তবে এমন হাতের কাজ, সৌন্দর্যের পিছনের গল্পটা কিন্তু অন্যরকম। বাড়ির পরিত্যক্ত জিনিসপত্র, বর্জ্য পদার্থ, ফল ও সবজির খোসা রয়েছে এই সমস্ত কিছুর মধ্যে।ডাস্টবিনে না ফেলে সেই সব পরিত্যক্ত সামগ্রী দিয়ে ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন হলদিয়া যুবক। পেট্রো ক্যামিকেলসের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বছর ৩৫ এর পবিত্র দাস। তার এই সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস, আমেরিকা বুক অফ রেকর্ডসের সম্মান অর্জন করেছেন তিনি। কারখানার সময়টুকু বাদ দিয়ে অবসরে নানা হস্তশিল্প নিয়ে ব্যস্ত থাকেন পবিত্র দাস।হলদিয়ার আজাদ হিন্দ নগরের বাসিন্দা পবিঞ্জর প্রধান লক্ষ্য দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা। কোনও বর্জ্য পদার্থ ফেলা যাবে না। তা দিয়ে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে কিছু হাতের কাজ তৈরি করা যেতেই পারে। ঘর সাজানোর নানাবিধ উপকরণ তৈরি করা যায়। প্ল্যাস্টিক কিংবা ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র পুনরায় ব্যবহার করে কাজে লাগানোর এই ভাবনা, পরিবেশ সুরক্ষার পক্ষে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।২২ ইঞ্চি চওড়া এবং ১৪ ইঞ্চি লম্বা পরিসরের রাধা-কৃষ্ণ মূর্তি কালো প্ল্যাস্টিকের ওপর ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। তাতে ডিম, রসুন, পেঁয়াজ, লেবুর খোসা ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে খড়, নারকেল ছোবড়া, ধনে গাছের শিকড়-সহ ১৪ রকমের ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র তিনি ব্যবহার করেছেন। এমনি করে ডাবের মাথার অংশ দিয়ে গ্লাডিওলাস ফ্লাওয়ার, খড় দিয়ে বলপেন, শুকনো ফুল দিয়ে রাখি, কানের দুল, গলার হার তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকেও পেয়েছেন শুভেচ্ছা বার্তা।তিনি বলেন, ‘চারপাশের পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে আমার লক্ষ্য জিরো ওয়েস্ট মিশন। তাই বাড়ির বর্জ্য ফেলে না দিয়ে সেগুলো দিয়ে কিছু তৈরি করার ভাবনা কাজে লাগাই। পরিবেশ বাঁচাতে এই বার্তা বেশি মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চাই।’ উদ্ভাবনী ভাবনায় তৈরি করেছেন 'সৌরদীপ'। ছোট্ট প্রদীপ বানিয়ে তাতে বসিয়ে দিয়েছেন ২ ইঞ্চি পরিসরের সোলার প্যানেল। সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় তাতে। প্রাকৃতিক সেই শক্তিতে প্রদীপ জ্বলবে। ভিন্ন পুজো পার্বণে প্রচুর ফুল ব্যবহার করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষে সেগুলিকে ফেলে দেওয়াটাই আমাদের অভ্যাস। ফেলে দেওয়া সেই সমস্ত ফুলগুলি থেকে দূষণ প্রতিরোধ করতে নতুন কিছু আবিষ্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পবিত্র। তার এই কর্মকান্ডে ভীষণ খুশি প্রতিবেশী, বুন্ধ বান্ধব থেকে সহকর্মীরা।