নীল-সাদা দোতলা বাড়ি। আজ থেকে তিন বছর আগেও সেখানে দিন-রাত গমগম করত লোকজন। কিন্তু, সেই বাড়িই শুনশান পড়ে রয়েছে। বীরভূমের নীচুপট্টির বাড়িটা দোর্দন্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। আপাতত গোরু পাচার মামলায় তিনি বন্দি তিহাড়ে। শুধু অনুব্রতই নন, এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকেও। ফলে খাঁ খাঁ করছে তাঁদের বীরভূমের আস্ত একটা বাড়ি।কয়েক বছর আগেও এই বাড়ি সারাক্ষণ গমগম করত। নামীদামি লোকজনের আনাগোনা ছিল নিত্য। অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকত। কিন্তু, সেই বিরাট বাড়ি এখন কে বা কারা রক্ষণাবেক্ষণ করে? তা স্পষ্ট নয় এলাকাবাসীর কাছে। মাঝে মধ্যে কয়েকজন এসে ঝাড়পোছ করে দিয়ে যায় বলে তাঁদের মনে হয় বটে, তবে তাঁরা কারা? এই বিষয়ে স্পষ্ট কোনও ধারনা এলাকাবাসীর নেই।এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ কারা করছেন? সেই প্রসঙ্গে স্পষ্ট ধারনা নেই দলেরও। এই কাজের জন্য দলীয় তরফে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলেই দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের। বিষয়টি নিয়ে সিউড়ির বিধায়ক তথা বীরভূমে তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন, 'কে বাড়িটি দেখভাল করছে, তা জানা নেই। বাড়িতে তো কেউ থাকে না।'একই কথা শোনা গেল বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘কে বাড়িটির দেখভাল করছে তা জানা নেই।’ তবে দলীয় তরফে এই বিষয়ে আলাদা করে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলেই জানান তিনি। উল্লেখ্য, গোরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতার হওয়ার পর এই ঘটনাটিকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে দাবি করেছিল তৃণমূল। পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলের অবর্তমানে তাঁর মতো করেই জেলায় দল চালাতে হবে, এই বার্তাও স্পষ্ট দেওয়া হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে। এখনও তিনিই বীরভূম তৃণমূলের সভাপতি।সম্প্রতি বীরভূমে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করেছিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কাউকে শিখিয়ে দিইনি। নতুন প্রজন্মই ওর কথা জিজ্ঞাসা করছে।’প্রসঙ্গত, অনুব্রত মণ্ডলকে গোরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করে CBI। প্রাথমিকভাবে তাঁকে আসানসোল সংশোধনাগারে রাখা হয়। এরপর তাঁকে হেফাজতে নিয়েছিল ED এবং তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে তাঁকে রাখা হয়েছে তিহাড় জেলে।