Tuberculosis Disease : এক বছরে টিবি রোগী বেড়ে গেল ৪৫ হাজার
এই সময় | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
রাজ্যে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে টিবি বা যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৪৫ হাজার। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, ২০২২ সালে রাজ্যে বাংলায় নতুন করে টিবি-তে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লক্ষ ২ হাজার মানুষ। সেখানে ২০২৩ সালে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১ লক্ষ ৪৭ হাজার হয়েছে। ২০২১ সালে বাংলায় যক্ষা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯১ হাজার।টিবি রোগী সংখ্যা গত তিন-চার বছরে ক্রমে বাড়লেও তাতে উদ্বিগ্ন নন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগীর বক্তব্য, ‘আমাদের লক্ষ্য, ২০২৫ সালের মধ্যে ষোলো আনা যক্ষ্মা দূরীকরণ। সেই লক্ষ্য সফল করতে হলে টিবি আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত করাটা জরুরি। কারণ, বেশি সংখ্যায় রোগী চিহ্নিত করা গেলে তাঁদের উপর সরকারি নজরদারি সরাসর রাখা যাবে। তাতে ওষুধ-ছুট আটকানো সম্ভব হবে। টিবি-মুক্ত বাংলা গড়ার দিকে অনেকটাই এগোতে পারব আমরা।’স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, গত বছর রাজ্যে যে সব জেলায় সব চেয়ে বেশি টিবি রোগীর সন্ধান মিলেছে, সেগুলো হলো: উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, উত্তর দিনাজপুর ও মুর্শিদাবাদ। ওই জেলাগুলোয় কেন টিবি রোগীর সংখ্যা বেশি, তা জানতে সমীক্ষা করবে স্বাস্থ্য ভবন। সেই সঙ্গে টিবি রোগের মোকাবিলায় বরাদ্দ করা হয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।ওই টাকা টিবি রোগীদের চিকিৎসায় এবং ওই রোগ কী ভাবে এড়ানো যায়, সেই বিষয়ে প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হবে। ঠিক হয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে কেবল যক্ষ্মা চিহ্নিতকরণ ও চিকিৎসাই হবে না, সেই সঙ্গে চলবে বিভিন্ন স্কুলকে অন্তর্ভুক্ত করে এই বিষয়ে সচেতনতা প্রসারে ও প্রচারে নানা ধরনের প্রতিযোগিতা। স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, যক্ষ্মাকে তাড়াতে হলে শুধু চিকিৎসাকেন্দ্রের উপর ভরসা করলে চলবে না। রোগ নির্ণয়ের পর টিবি রোগীকে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আনতে হলে রাজ্য জুড়ে পরিষেবার আরও সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে। তাই, গ্রাম বা শহরের সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রেও এ বার থেকে যক্ষ্মা নির্ণয় ও চিকিৎসা চলবে সমানতালে।সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর মূল কাজ হবে, যক্ষ্মার চিকিৎসার পাশাপাশি নতুন টিবি রোগীদের নিয়মিত খুঁজে বার করে চিকিৎসার আওতায় তাঁদের আনা। কর্মসূচি সফল করতে জোর দেওয়া হচ্ছে সচেতনতা প্রচারে, যার নেপথ্যে থাকবেন যক্ষ্মা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিরা। সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো স্থানীয় স্কুলের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আয়োজন করবে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার। পোস্টার, লিফলেটও বিলি করা হবে সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে। সাধারণ মানুষকে জানানো হবে, দু’সপ্তাহের বেশি কাশি এবং কাশির সঙ্গে রক্ত বা শ্বাস নিতে কষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে যক্ষ্মা পরীক্ষা করা জরুরি।ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ অংশুমান মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘যক্ষ্মা এমন একটি ব্যাকটিরিয়াঘটিত রোগ, যার আঁচ সংক্রমণের পর পরই বোঝা যায় না। ধীরে ধীরে জীবাণু বংশবিস্তার করে এবং আস্তে আস্তে তা ছাপ ফেলে শরীরে। তাই, সাধারণত সংক্রমণের বেশ কয়েক মাস বা কয়েক বছর পরে সংক্রমিত অসুস্থ হন। তাই ছোটখাটো উপসর্গগুলোকে একদম হালকা করে দেখা উচিত নয়।’