• Lok Sabha Election 2024 : ‘নো ভোট টু...’ স্লোগান পাল্টে ‘ডিফিট বিজেপি’
    এই সময় | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনপ্রিয় হয়েছিল ‘নো ভোট টু বিজেপি’ স্লোগান। নির্বাচনের আগে এবং ভোট জেতার পরে এই স্লোগানের রূপকারদের ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশও বাংলায় ২০০ পার করার দাবি তোলা বিজেপির ৭৭-এ আটকে যাওয়ার নেপথ্যে এই স্লোগানের ভূমিকা স্বীকার করেছেন।তিন বছর পর আরও একটা ভোট সামনে। আসন্ন লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে ফের আসরে নামছেন ‘নো ভোট টু বিজেপি’র রূপকারেরা। তবে এবার তাঁদের স্লোগান হতে চলেছে, ‘ডিফিট বিজেপি’ বা ‘বিজেপিকে হারিয়ে দাও।’আগামী ১৩ মার্চ মৌলালি যুবকেন্দ্রে কনভেনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে ‘ফ্যাসিস্ট আরএসএস, বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলা’ নামে মূল মঞ্চের তরফে। কেন এবার স্লোগানে পরিবর্তন? অন্যতম আয়োজক কুশল দেবনাথের যুক্তি, ‘গত দশ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকে গণতন্ত্রকে পুরোপুরি ধ্বংসের পথে নিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তাই সরাসরি এবার সেই ফ্যাসিস্ট শাসকদের পরাজয়ের ডাক দিচ্ছি।’একুশের নির্বাচনের মতোই কি নানা অংশের মানুষ এই মঞ্চের অধীনে আসবেন? এই প্রশ্নে অবশ্য খানিকটা বিতর্ক রয়েছে মঞ্চের অভ্যন্তরেই। বিশেষ করে একুশের নির্বাচনে এই স্লোগানকে সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্যের পর সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে, এই গোটা উদ্যোগটিই আসলে তৃণমূলের ছদ্মবেশ।তবে কুশল জানাচ্ছেন, একুশের নির্বাচনের আগে তাঁরা শুধু বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আবার তৃণমূল সরকারেরও নানা সমালোচনা করা হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে তা প্রকাশ্যে আসেনি। এবার? কুশলের কথায়, ‘এবার আমরা ডিফিট বিজেপির পাশাপাশি কেন্দ্র ও রাজ্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পরিসর বৃদ্ধি ও তাকে সমর্থন করার কথাও জোরালো ভাবে বলছি। সন্দেশখালির ঘটনারও তীব্র নিন্দা করেছে মঞ্চ। ফ্যাসিবাদকে হারাতে গেলে ফ্যাসিবাদীদের ছায়ায় রাজ্য পরিচালনা করলে হয় না।’যদিও ‘নো ভোট টু বিজেপি’র সঙ্গে জড়িত অনেকেই সমালোচনায় মুখর। যেমন পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আমরা তৃণমূলের দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বিচক্ষণ রাজনীতিক। তিনি আমাদের মঞ্চকে ব্যবহার করেছেন। সেই ভুল যদি আমরা মানুষের কাছে স্বীকার না করি, তা হলে একই ঘুঁটি বারবার মানুষের সামনে আনলে সেটা গ্রহণযোগ্য থাকে না।’ অনিকেত কনভেনশনে যোগ দিচ্ছেন না।তাঁর মতো মঞ্চের আরও কিছু মানুষের বক্তব্য, এই মঞ্চের সাফল্যকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নিজেদের রাজনৈতিক কেরিয়ার গুছিয়ে নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে নাম উঠে আসছে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ ও রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামের। তন্ময় ‘নো ভোট টু বিজেপি’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।তাঁর বক্তব্য, ‘নো ভোট টু বিজেপি বলেছিলাম। নো ভোট টু কংগ্রেস বা সিপিএম বা তৃণমূল তো বলিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিচক্ষণ বলেই তিনি এটাকে কাজে লাগিয়েছেন। অন্যরাও পারত। করেনি কেন?’ আর সামিরুলের বক্তব্য, ‘নো ভোট টু বিজেপিই আমার একমাত্র পরিচয় নয়। আমি দীর্ঘদিন ধরে নানা গণআন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।’এই মঞ্চের আরও এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য কস্তুরী বসুর সংযোজন, ‘বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ছিল এবং আছে। তাতে কোনও দোষ নেই। বহু বামপন্থী আমাদের সঙ্গে আছেন। কিন্তু গায়ে লেগেছে তাঁদের যাঁরা বলতেন আগের রাম পরে বাম।’ আর রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘অপ্রাসঙ্গিক শক্তি। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়েও এরা চেষ্টা করেছিল। সেখানে রেজ়াল্ট যা হয়েছে, বাংলাতেও তা-ই হবে।’
  • Link to this news (এই সময়)