আসন সমঝোতা নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জয়রাম রমেশ দাবি করলেও বাংলায় তৃণমূল যে একাই ৪২টি আসনে লড়াই করবে, দলের সেই অবস্থান ফের স্পষ্ট করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মহেশতলায় রবিবার একটি জলপ্রকল্পের উদ্বোধনের পর কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে সিট-শেয়ারিং নিয়ে অভিষেক বলেন, ‘জোট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়ার পর আমার আর কিছু বলা সাজে না। গত ২৯ জানুয়ারি জোট নিয়ে আমতলায় সংবাদমাধ্যমের সামনে আমি বিস্তারিত বলেছি।’তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সংযোজন, ‘আপনারা (কংগ্রেস) একদিকে বলছেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোট চাই। অন্যদিকে অধীর চৌধুরী বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতা থাকলে বহরমপুরে লড়াই করুন। অধীর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। কংগ্রেসের (নেতৃত্বের) কথা যদি তাদের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি না শোনেন, আমাদের তো কিছু বলার নেই।’কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা না হওয়ার জন্য তৃণমূল নেতৃত্ব যে যুক্তি দিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো বাংলায় অধীরের তীব্র তৃণমূল বিরোধী ভূমিকা। এছাড়া কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের মনোভাব নিয়েও মমতা-অভিষেক একাধিকবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যদিও কংগ্রেসের একাংশ দাবি করেছে, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-তৃণমূল সমঝোতা যাতে হয়, তার জন্য সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব ও আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবও উদ্যোগী হয়েছেন।পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে পাঁচটি আসন ছাড়া হলেও সমঝোতা সম্ভব বলে এই নেতারা তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। লালু-অখিলেশ উদ্যোগী হলেও তৃণমূল নেতৃত্বের অবস্থান বদলের কোনও ইঙ্গিত অভিষেক দেননি। কংগ্রেসের একাংশ থেকে যখন দাবি করা হচ্ছে, তৃণমূলের সঙ্গে জোট করতে লালু-অখিলেশ উদ্যোগী হয়েছেন, তখনই আবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রার্থী অধীর চৌধুরী বাছাই নিয়ে বৈঠক ডাকতে চলেছেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।এনিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। অধীর শনিবার ঘোষণা করেছেন, বাংলায় বামেদের সঙ্গে জোট করতে তিনি সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজ্যে ৪২টি আসনের মধ্যে কতগুলি আসনে কংগ্রেস লড়াই করবে, তা ইলেকশন কমিটির বৈঠকে ঠিক করতে চাইছেন অধীর। ইলেকশন কমিটির বৈঠকে এই আসনগুলি চিহ্নিত করে নিয়ে তারপর সেলিমের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসতে চান বহরমপুরের সাংসদ। যদিও রবিবার রাত পর্যন্ত ইলেকশন কমিটির বৈঠক আহ্বান করা হয়নি।প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশের বক্তব্য, সেলিমের সঙ্গে জোট নিয়ে কথা শুরু করেছেন বলে অধীর ঘোষণা করলেও যেহেতু এআইসিসি-র একাংশ সমান্তরাল ভাবে তৃণমূল নেতৃত্বের মন বোঝার চেষ্টা করছেন, তাই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ধীরে চলো নীতি নিয়ে চলছেন। যদিও এআইসিসি নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, আগামী ২৮ তারিখ ইলেকশন কমিটির বৈঠক ডাকা হতে পারে। এছাড়া নির্বাচনী বিষয় নিয়ে এআইসিসি-র যে স্ক্রিনিং কমিটি রয়েছে, সেই কমিটিও পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে এই সপ্তাহে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে।