মার্কশিটে স্টার-লেটার মার্কস, সেই মেধাবী ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াই গ্রেফতার চাল চুরিতে
এই সময় | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বরাবর ক্লাসে 'ফার্স্ট বয়'! মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর। জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে বর্তমানে কলকাতার একটি নামী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে পাঠরত ছাত্রের নাম জড়াল ধান চুরিতে। ইতিমধ্যে শুভদীপ বাড়ি নামক ওই ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, পাত্রসায়রের ধগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ধৃত ছাত্রের বাবা পেশায় শিক্ষক, দাদা ইঞ্জিনিয়র। গ্রামেই দোতলা পাকা বাড়ি। সচ্ছ্বল পরিবারের মেধাবী এই ছাত্রের ধান চুরিতে জড়ানোর খবরে হতবাক এলাকাবাসী। পরিবারের লোকজনও বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছেন না।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক ব্যক্তির খামার থেকে ৫০ বস্তা ধান চুরি করে তা ট্রাক্টরে পাচারের ঘটনায় শুভদীপের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে একদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ধান চুরির ঘটনায় শনিবার ধগড়িয়া গ্রামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরা করেই শুভদীপের নাম পাওয়া যায়। সোনামুখী শহরে একটি ভাড়াবাড়ি থেকে চুরি যাওয়া বেশ কয়েক বস্তা ধান উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় মূল অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। যে ট্রাক্টরে করে চুরি করা ধান পাচার করা হয়েছিল তাও খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ।ধৃত ছাত্র শুভদীপের বাবা বলেন, 'ছেলে বরাবরই পড়াশোনায় খুব ভালো। স্কুলে সে বরাবরই ফার্স্ট বয় ছিল। কলকাতার নামী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি করেছিলাম। সরস্বতী পুজোর দু'দিন আগে সে বাড়িতে আসে। ও যে ধান চুরিতে জড়িয়ে পড়বে তা বিশ্বাস করতে পারছি না।' তাঁর মা বলেন, ' আমাদের সংসারে অভাব নেই। ছেলে কেন এমনটা করবে!শুভদীপের দাদা ইঞ্জিনিয়র। ছোট ছেলেকে হাত খরচের টাকাও নিয়মিত দেওয়াহত বলে পরিবার সূত্রে খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাত্রসায়রের ধগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সাধন বাড়ি চুরির ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সরস্বতী পুজোর পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর বাড়ির পাশে খামারে থাকা প্রায় ৫০ বস্তা মিনিকিট ধান চুরি হয়ে যায়।তদন্তে নেমে পুলিশ শুক্রবার ধগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা পিয়ার আলি মিদ্যাকে গ্রেফতার করে। তাকে দু'দিন হেফাজতে নিয়ে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে,ওই ঘটনার সঙ্গে তারই বন্ধু ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র শুভদীপ যুক্ত রয়েছে। সেইমতো শনিবার রাতেই সোনামুখীর ধানশিমলা গ্রামে মাসির বাড়ির তিনতলার চিলেকোঠায় লুকিয়ে থাকা এই ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়।যদিও আদালতে তোলার সময় অভিযুক্ত শুভদীপ দাবি করেন, ওই দিন তিনি বন্ধুদের নিয়ে গ্রামে পিকনিক করছিলেন। পিকনিকের পর রাত ১২টা নাগাদ তাকে স্থানীয় একজন পাঁচ হাজার টাকা দেবে বলে জানান। বিনিময়ে ধান বোঝাইয়ের সময় টর্চের আলো দেখাতে হবে। কোনওকিছু না ভেবেই পাঁচ হাজার টাকার লোভে সে ওই শর্তে রাজি হয়ে যান।