তৃণমূলের নিয়ম অনুযায়ী দলে এক পদ নিয়েই থাকতে হবে নেতাদের। কিন্তু বহুদিন ধরেই দলের হয়ে দু’টি পদ সামলাচ্ছিলেন খানাকুলের দাপুটে তৃণমূল নেতা নইমুল হক। এ নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ বাড়ছিল। শেষমেশ খানাকুল ১-এর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করলেন নইমুল হক।তৃণমূলেরই একাংশের চাপে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়। ইতিমধ্যে তাঁর পদত্যাগ পত্র মহকুমাশাসকের দপ্তরে পৌঁছে গিয়েছে। আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, ‘পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির পদ থেকে নইমুল ইস্তফা দিয়েছেন। এখন থেকে তিনি পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলাবেন।’খানাকুলের এক দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসেবেই পরিচিতি নইমুলের। এতদিন তিনি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির পাশাপাশি পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল তৃণমূলের অন্দরে। দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরা দু’টি পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। পঞ্চায়েত সমিতির জনপ্রতিনিধিদের একাংশ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে গণ ইস্তফার হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিয়েছিলেন।এই ঘটনার জেরে পঞ্চায়েত সমিতির কাজকর্ম একপ্রকার থমকে যায়। এরপরেই উপরতলার নেতারা পরিস্থিতি সামলাতে ময়দানে নামেন। তারই জেরে এই পদত্যাগ। নইমুল হক বলেন, ‘পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। পদত্যাগপত্র মহকুমাশাসকের দপ্তরে জমা দিয়েছি। আগামী দিনেও দলের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করব।’ আরামবাগের এসডিও সুভাষিনী ই জানান, ইস্তফাপত্র জমা পড়েছে।তবে একটি পদ থেকে নইমুল হক পদত্যাগ করলেই কী খানাকুল ১ পঞ্চায়েত সমিতির ডামাডোল কাটবে। খানাকুল ১ নম্বর ব্লক তৃণমুল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কি বন্ধ হবে— এমনই প্রশ্ন উঠছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, ইতিমধ্যেই নইমুল হকের সঙ্গে সদ্য ব্লক তৃণমূল সভাপতি দীপেন মাইতির ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়েছে।শোনা যাচ্ছে দীপেন মাইতির চাপেই নইমুল একটি পদ ছেড়ে দেন। তবে খানাকুল তৃণমূলের সংগঠনের রাশ অনেকটাই নইমুলের হাতেই রয়ে গিয়েছে। এই রকম পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দীপেন মাইতিকে হোঁচট খেতে হবে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দীপেন মাইতি সাংগঠনিক দিক দিয়ে কতটা সফল হবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।