প্রেশার-সুগার-অনিদ্রায় ভুগতেন ফুটপাথবাসী সুমি দাস। চোখের ছানি অপারেশনের আগে একটা ইসিজি-ও করিয়ে উঠতে পারছিলেন না পাঁপড় বেলে সংসার চালানো অলকা গায়েন। হাঁপানির টান ছিল কমল সর্দারের। কালীঘাট এলাকার মহামায়া লেনের মুখে চলা স্বাস্থ্য শিবিরই তাঁদের জীবনে নয়া দিশা দেখিয়েছে।গলির মোড়ে বিনামূল্যে ডাক্তার দেখিয়ে, ওষুধ পেয়ে এখন সুস্থ সুমি। নিখরচায় অ্যাজ়মার চিকিৎসা করিয়ে এখন দিব্যি আছেন কমল। বিনা পয়সায় ইসিজি করিয়ে এখন ছানি অপারেশনের জন্য প্রস্তুত অলকাও। সৌজন্যে, পথবাসীদের জন্য প্রতি রবিবার সকালে আয়োজিত একটি হেলথ ক্যাম্প।যেখানে প্রথমে চিকিৎসক অলোকেশ বিশ্বাস আর এখন চিকিৎসক সম্বৃতা বন্ধুর চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠছেন একের পর এক প্রান্তিক মানুষ। পিছনে রয়েছেন একজন পুলকার চালক, যিনি নিজের জীবনের লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছেন আগেই। সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসা অভুক্ত রোগী-পরিজনদের মুখে অন্ন তুলে দিয়ে আগেই নজর কেড়েছিলেন ‘হসপিটাল ম্যান’ নামে পরিচিত সেই মাঝবয়সি ব্যক্তি, পার্থ করচৌধুরী।এবার তাঁর উদ্যোগেই সচল কালীঘাটের গলির মুখে একজোড়া টেবল পেতে শুরু হওয়া একটি স্বাস্থ্য শিবির। সাধারণ প্রেশার-সুগার মাপার মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সেখানে হচ্ছে ইসিজি-ও। ঘণ্টা তিনেক চলা সেই ক্যাম্পে রোজ পরিষেবা পান অন্তত ৩০ জন প্রান্তিক রোগী। সেখানে রোগী দেখন সম্বৃতা, ওষুধ দেন পার্থ। জানাচ্ছিলেন, ওই চিকিৎসক পারিশ্রমিক ও যাতায়াতের খরচ কিছু না নিয়েই প্রতি রবিবার সকালে হাজির হয়ে যান রোগী দেখতে।আর সারা সপ্তাহ হাজরা লাগোয়া চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট (সিএনসিআই) ও চিত্তরঞ্জন সেবাসদন কিংবা শম্ভুনাথ পণ্ডিত অথবা এসএসকেএম হাসপাতালের আউটডোরে আগত রোগী-পরিজনদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ভাত খাওয়ান তিনি। অন্তত ১৫০ অভুক্তের সহায় তিনি। আর রবিবার ছুটির দিনে চালান হেলথ ক্যাম্প।