বার্ড ফ্লু আতঙ্ক এবার অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডে। মৃত স্কুয়াস জাতীয় পাখির শরীরে এই জীবাণু পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছে স্প্যানিশ সরকার। এই প্রথম এখানে বার্ড ফ্লুর জীবাণু মিলল। এর ফলে পরিবেশগত বিপর্যয় হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।স্পেনের বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মৃত স্কুয়াসের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, পাখিগুলি H5 সাব-টাইপ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল। এর মধ্যে একজনের শরীর থেকে পাওয়া গেছে প্যাথোজেনিক ভাইরাস। H5N1 ক্লেড-এর বিশ্বব্যাপী বিস্তার। অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডে বার্ড ফ্লুর সন্ধান পাওয়া যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্পেনের বিজ্ঞানীরা।মানুষের মধ্যে এই জীবাণুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। অ্যান্টার্কটিকার বন্যপ্রাণীদের মধ্যে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন স্প্যানিশ বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে এই অঞ্চলে ৪৮ প্রজাতির পাখির বাস। রয়েছে ২৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী।প্রসঙ্গত, গত বছর অক্টোবর মাসে অ্যান্টার্কটিকার দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপে একটি কিং পেঙ্গুইন মারা যায়। বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় বলে সন্দেহ করা হয়েছিল। অত্যন্ত সংক্রামক H5N1 ভাইরাস দ্বারা পেঙ্গুইটির মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেই সঙ্গে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে, পরিবেশগত বিপর্যয় হতে পারে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছিলেন তাঁরা।এখানে বলে রাখা ভাল যে অ্যান্টার্কটিকা হচ্ছে একমাত্র প্রধান ভৌগলিক অঞ্চল, যেখানে উচ্চ প্যাথোজেনিসিটি এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস আগে কখনও সনাক্ত করা যায়নি।চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে একটি মরু ভাল্লুকের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তর আলাস্কায়। কী কারণে ভাল্লুকের মধ্যে বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে তৈরি হয়েছিল ধোঁয়াশা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, পরিযায়ী পাখি থেকে আলাস্কার মরু ভাল্লুকের মধ্যে এই সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।তবে, বার্ড ফ্লু-তে আক্রান্ত কোনও প্রাণীর দেহ খাওয়ার জন্য ভাল্লুকটির মৃত্যু হয়েছিল বলে বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক অনুমান। মৃত ভাল্লুকের শরীর থেকে মিলেছিল H5N1 ইনফ্লুয়েঞ্জার স্ট্রেন। শুধু অ্যান্টার্কটিকা নয়, সম্প্রতি বার্ড ফ্লুর প্রার্দুভাব দেখা গিয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকায়ও। সেখানে H5N1 ক্লেড-এ আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার সামুদ্রিক প্রাণী এবং অন্যান্য সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীর মৃত্যু হয়েছিল।