আইনি প্যাঁচে অপসারণ ‘জটিল’? কত বেতন শেখ শাহজাহানের?
এই সময় | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
প্রায় ২ মাস আগে সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েছিলেন ED অফিসাররা। সেই ঘটনার পর থেকে এখনও তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনায় জল গড়িয়েছে অনেকদূর। শাহজাহানের বিরুদ্ধে গুচ্ছ অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সন্দেশখালি নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসেছে। সোমবারই কলকাতা হাইকোর্ট, শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে যে কোনও বাধা নেই, তা স্পষ্ট করেছে। তবে শাহজাহান কিন্তু এখনও জন প্রতিনিধি। নিয়ম অনুযায়ী সাম্মানিকও পাচ্ছেন! তবে সামান্য টাকাই।এ হেন শাহজাহানের ঘোষিত সম্পত্তির তালিকাতেই আছে ১৫-১৭টি গাড়ি, আড়াই কোটি টাকার গয়না, বিঘার পর বিঘা জমি। ২০২৩ সালে ভোটের আগেই জানা যায় তাঁর এই সম্পত্তির কথা। ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামা দাখিল করেন, তাতেও দেড় কোটি টাকার বাড়ি, ব্যাঙ্কে ১ কোটি টাকার সম্পত্তি ছিল বলে জানা যায়। সন্দেশখালিতে পা রাখলেই জানা যায়, নানান রকম ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত শাহজাহান কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক।শাহজাহান ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ। ঘটনার পরেই তাঁকে সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে মৎস্য বিভাগের দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়ে নেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী।কর্মাধ্যক্ষদের বেতনমন্ত্রী-বিধায়কদের পর ২০১৯ সালেই সাম্মানিক বাড়ানো হয়েছিল জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্যদেরও। সাম্মানিক বা বেতন বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্দেশ অনুযায়ী ২০১৯ সালের পর, জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের মাসিক ভাতা পান ৯ হাজার টাকা। সহকারী সভাধিপতিরা পান ৮ হাজার টাকা।কর্মাধ্যক্ষরা মাসিক ভাতা পান ৭ হাজার টাকা, অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষরাও ৭ হাজার টাকা পান। জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্যদের মাসিক ভাতা ২০১৯ সালে দেড় হাজার থেকে এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার টাকা। সেই হিসেবে ৭ হাজার টাকা পান শাহজাহান।শাহজাহান কি এরপরেও সাম্মানিক পাবেন? জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, 'নিয়ম অনুযায়ী, তিনি এখনও কর্মাধ্যক্ষই আছেন। এভাবে কেউ তাঁর পদের দায়িত্ব হাতে নিলে বা মুখে বললেই সেই পদ থেকে সরানো যায় না। তাঁকে হয় (পড়ুন, শাহজাহান) নিজেকে ইস্তফা দিতে হবে। অথবা তাঁর বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করতে হবে। অনাস্থা প্রস্তাব এনেও তাঁকে পদ থেকে সরানো যায়। তবে নিয়ম অনুযায়ী, কর্মাধ্যক্ষ বা নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের ক্ষেত্রে এক বছরের মধ্যে অনাস্থা আনা যায় না।' আগামী মাসেও সাম্মানিক পাবেন শাহজাহান? ওই কর্তা বলেন, 'নিয়ম অনুযায়ী না পাওয়ার তো কথা নয়!'এ বিষয়ে জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সুদীপ্ত সাঁতরাকে পক্ষ থেকে ফোন করা হলে তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, 'নিয়ম মেনে যা করার করা হবে।' তবে জেলা প্রশাসনের অন্য এক কর্তা মানছেন, 'নিয়ম অনুযায়ী অপসারণ করতে গেলে যে চিঠি পত্র করতে হয়, তা এখনও করা হয়নি।' এ বিষয়ে নারায়ণ গোস্বামীর প্রতিক্রিয়ার জন্য ফোন করা হলে তিনি জরুরি মিটিংয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন।