• Calcutta High Court : উৎকট গন্ধ, ‘বডি’র খোঁজে দিনভর ব্যর্থ তল্লাশি কোর্টে
    এই সময় | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • ‘দেহ উদ্ধার’ করতে সারাদিন গেল হাইকোর্টের কর্মী-অফিসারদের। ‘উদ্ধার’ অবশ্য হলো না। শনি-রবি, দু’দিন ছুটির পর সোমবার কোর্ট খুলতে ১২ নম্বর এজলাসে দুই বিচারপতি সকালে সময় মতোই এসে হাজির হয়েছিলেন। রোজকার মতো ছিলেন কোর্টের অফিসার, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থীরাও। কিন্তু প্রথম থেকেই দুর্গন্ধে কেউ এক মুহূর্ত টিকতে পারছিলেন না। কিছু একটা মরেছে সন্দেহে দুর্গন্ধ কাটাতে এজলাসে এসি’র সঙ্গেই চালিয়ে দেওয়া হয় সব পাখা। তাতে বেড়ে যায় বিপত্তি। গন্ধ ছড়াতে থাকে দ্রুত। আইনজীবী, কোর্টের কর্মী-অফিসারদের কারও কারও তখন বমি আসার জোগাড়। নাকে রুমাল চেপেও ওয়াক তুলতে শুরু করেন কেউ কেউ।ততক্ষণে স্পষ্ট, ইঁদুর মরেছে। দুর্গন্ধে আর এজলাসে বসতেই পারলেন না বিচারপতি সূর্যপ্রকাশ কেশওয়ানি ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। শুনানি শুরুর আগেই তাঁদের ছাড়তে হয় এজলাস। শুরু হয় মরা ইঁদুরের সন্ধান। ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি, এসি’র মিস্ত্রি থেকে রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি--পূর্ত দপ্তরের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা কোমর বেঁধে নামেন ইদুর খুঁজতে। রেজিস্ট্রাররা দফায় দফায় এসে নাকে রুমাল চেপে শুরু করেন সন্ধান-কাজের তদারকি।কাঠের মঞ্চ সরিয়ে শুরু হয় ইঁদুরের খোঁজ। হাইকোর্টের এজলাসে মামলার শুনানিকালীন পায়ের উপর দিয়ে ধেড়ে ইঁদুরদের দৌড়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে আইনজীবী, কোর্ট অফিসারদের। কিন্তু সেই ইঁদুর মারা গেলে কতবড় বিপত্তি হতে পারে--তা এ দিন মালুম করলেন কর্মী-অফিসাররা। ঢালা হলো লিটার লিটার ফিনাইল, বালতি বলতি জল। ‘বডি’র খোঁজে কেউ কার্নিশে উঠে ঘুলঘুলিতে চোখ রাখলেন।এসি মেকানিকরা মেশিনের ভিতরে দেহের সন্ধান না পেয়ে বাইরের দিকে হাওয়া ঠেলে ঠিক কোন জায়গা থেকে গন্ধ বেরোচ্ছে--তার হদিশ পাওয়ারও চেষ্টা করলেন। এজলাসের ভিতরে স্তূপীকৃত মামলার নথি সরিয়ে চলল চিরুনি তল্লাশি। পূর্ত দপ্তরের কর্মীরা কোর্ট অফিসারদের বসার মঞ্চের তলার দিকেও চালালেন খানাতল্লাশি। কেউ বললেন, পুলিশ কুকুর আনা হোক দেহ খুঁজতে। কেউ আবার হাইকোর্টে বিড়াল পোষারও বিধান দিলেন। দরজার ফাঁক গলে বা অন্য কোনও ছিদ্রপথে ইঁদুরের প্রবেশ আটকাতে চলল সিমেন্ট-বালি দিয়ে ভরাটের কাজও।এত সবের পরেও অবশ্য সন্ধে পর্যন্ত সেই ইঁদুরের আর সন্ধান মিলল না। দুপুরের পরেও ফের এক বার বিচারপতিরা এজলাসে এসেছিলেন। কিন্তু মরা ইঁদুরের গন্ধের সঙ্গে ফিনাইলের গন্ধ আর ঝাঁজে অস্বস্তি তখন দ্বিগুণ। শেষ পর্যন্ত আগামী কয়েক দিন ওই এজলাসে আর না বসারই সিদ্ধান্ত নেন বিচারপতিরা। অগত্যা ওই এজলাস থেকে মামলার নথি সরানোর কাজ শুরু করে পূর্ত দপ্তর। ঠিক হয়েছে, আজ, মঙ্গলবার থেকে ২৬ নম্বর এজলাসে বসবেন ওই দুই বিচারপতি।
  • Link to this news (এই সময়)