প্রান্তিক আলুচাষিদের সুরক্ষা দিতে এবার আইন প্রয়োগের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তর নির্দেশিকা জারি করেছে, রাজ্যের সব হিমঘরে প্রতিটি জেলাশাসকের জন্য ২০ শতাংশ জায়গা সংরক্ষিত রাখতে হবে। জেলাশাসকরা সেই ২০ শতাংশ জায়গা ছোট আলু চাষিদের মধ্যে বিলি করবেন।আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত ওই জায়গা ধরে রাখতে হবে বলে হিমঘর মালিকদের জন্য নির্দেশ দিয়েছে দপ্তর। আগে এলে আগে দেওয়ার ভিত্তিতে ওই জায়গা বণ্টন করতে পারবেন জেলা শাসকেরা। এক জন চাষি ওই কোটা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ কুইন্টল আলু রাখতে পারবেন। দীর্ঘদিনের অভিযোগ, বড় কারবারিদের দাপটে এবং মালিকদের সদিচ্ছার অভাবে ছোটখাটো আলুচাষিরা হিমঘরে জায়গাই পেতেন না। সরকারি নির্দেশের পরে সেই জটিলতা কাটবে বলেই আশা প্রান্তিক চাষিদের।কৃষি বিপণন দপ্তর থেকে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ (লাইসেন্সিং অ্যান্ড রেগুলেশনস) অ্যাক্ট-১৯৬৬-এর ২০-সি ধারায় এই নির্দেশ জারি করা হলো। নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যের সব হিমঘরের মালিকদের সেখানকার মোট ধারণক্ষমতার ২০ শতাংশ জায়গা প্রতি জেলাশাসকের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে।২০ মার্চ পর্যন্ত ওই জায়গা সংরক্ষিত রাখতে হবে। জেলাশাসক তাঁর ক্ষমতা বলে ওই জায়গা প্রান্তিক আলুচাষিদের মধ্যে বণ্টন করবেন।২০ মার্চ পর্যন্ত যে সব চাষি জেলাশাসকের কাছে আগে আবেদন করবেন, জায়গা খালি থাকা পর্যন্ত এক জনকে সর্বোচ্চ ২৫ কুইন্টল আলু হিমঘরে রাখার ছাড়পত্র দেওয়া হবে।তবে চাষিদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক হলো কিষান ক্রেডিট কার্ড বা সমতুল কোনও পরিচয়পত্র থাকতে হবে। তার ভিত্তিতেই জায়গা বণ্টন করা হবে। ২০ মার্চের পরে যদি কোনও জায়গা তখনও বিলি না হয়ে থাকে, তা হলে সেই জায়গা হিমঘর মালিকেরা বিক্রি করতে পারবেন। তবে বিলি না করতে পারা জায়গার জন্য বা পরে মালিকরা সেই জায়গা বিক্রি না করতে পারলে, তার জন্য হিমঘর মালিকরা কোনও ক্ষতিপূরণ পাবেন না।প্রান্তিক চাষিদের এই দাবি দীর্ঘদিনের। কারণ, বড় মজুতদার-ব্যবসায়ী এবং ফড়েদের দাপটে চাষিরা হিমঘরে জায়গা বুক করতে পারতেন না। এবার সেই সমস্যার সুরাহা হবে বলে আশা চাষিদের।