• Calcutta High Court : ‘অপ্রয়োজনীয় এফআইআর’, হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পুলিশ
    এই সময় | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • সন্দেশখালিতে গোলমাল লেগেই রয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। বিভিন্ন অভিযোগ আসারও বিরাম নেই। এরই মধ্যে সন্দেশখালির ঘটনার প্রেক্ষিতে রুজু হওয়া একটি মামলার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। আবার সন্দেশখালিরই অন্য একটি মামলায় পুলিশের তদন্ত নিয়ে বসিরহাট আদালতের পর্যবেক্ষণও সোমবার হাইকোর্টের সামনে এসেছে।এ দিন বিচারপতি কৌশিক চন্দের আদালত একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের শীর্ষকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর স্থগিত করে সমস্ত তদন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আবার সন্দেশখালির ধৃত বিজেপি নেতা বিকাশ সিংয়ের এফআইআর খারিজের আবেদনে নিম্ন আদালতের পর্যবেক্ষণ দেখে হাইকোর্ট বিস্ময় প্রকাশ করে। যদিও রাজ্য এই মামলা শোনার এক্তিয়ার নিয়ে আইনি প্রশ্ন তোলায় কাল, বুধবার ফের শুনানি হবে হাইকোর্টে।একটি নিউজ় চ্যানেলের শীর্ষকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় এফআইআর স্থগিত করতে গিয়ে এ দিন বিচারপতি চন্দের বক্তব্য, ‘যে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওঁর (শীর্ষকর্তা) বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে, হাইকোর্ট তা স্থগিত করল। গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া ১২ সপ্তাহ স্থগিত থাকবে। যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেখানে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ ও ৫০৫ ধারা প্রয়োগ করা যায় না বলে আদালত মনে করে।’ সব পক্ষ হলফনামা দিলে ছ’সপ্তাহ পর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।এ দিন হাইকোর্টের বক্তব্য, সংবাদ পরিবেশনে ভুল তথ্য দেওয়ার পর চ্যানেলটি নিজেই যেহেতু ভুল শুধরে নিয়েছে, তাই সেখানে তাদের উদ্দেশ্য কতটা হানিকর, সেটা দেখা দরকার। যদিও রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, ‘ভুল যে করেছিলেন, সেটা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। কিন্তু সেটাই কি শেষ কথা! এটা একটা অপরাধ। তাই, ভুল স্বীকার করলেই তিনি দায় এড়াতে পারেন না।’বিচারপতির ফের বক্তব্য, ‘এখানে মোটিভ দেখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর ইনটেনশন কী ছিল, সেটা বোঝা জরুরি। এক জন কী উদ্দেশ্যে এটা করেছেন, তা না-বুঝলে এই ধারা দেওয়ার কারণ স্পষ্ট করুন। তাঁরা যেমন ভুল খবর করেছেন, তেমন বার বার ভুল স্বীকার করেছেন। এটা অপ্রয়োজনীয় এফআইআর।’ আদালত এফআইআর স্থগিত করলেও মামলাটি চালু রাখে— যেহেতু রাজ্যের দাবি, নিজেদের বক্তব্য তারা হলফনামা দিয়ে জানাবে।আবার বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহের দায়ের করা মামলায় তাঁর আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেন, ‘বিকাশ সিংহের গ্রেপ্তারিতে বিস্তর ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছে বসিরহাট আদালত। এমনকী, যে অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই অভিযোগে গ্রেপ্তারের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও বিচারক প্রশ্ন তুলেছেন।’হাইকোর্টে এ দিন জানানো হয়, একই মামলায় উত্তম সর্দার ও বিকাশ সিংহকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে উত্তম সর্দার জখম হয়েছেন ও তাঁর চিকিৎসা করানো হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করে। কিন্তু সেই চিকিৎসার কোনও নথি পুলিশ দেখাতে পারেনি, এমনটা হাইকোর্টের কাছে দাবি করা হয়েছে।শিবু হাজরার অফিসের এক কর্মী থানায় অভিযোগ করেন, তাঁদের মুরগির হ্যাচারি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৭০-৮০ জনকে নিয়ে বিকাশ এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় বিকাশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বসিরহাট আদালতের বিচারকের আরও পর্যবেক্ষণ: পুলিশ তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে, অভিযুক্ত যাতে তাঁর ন্যূনতম অধিকার না-পেতে পারেন, সে জন্য তাঁর বিরুদ্ধে একটি কঠিন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এফআইআরের বক্তব্য এবং বাস্তবে দেওয়া নথির মধ্যে কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও নিম্ন আদালতের বিচারক মনে করেছেন।
  • Link to this news (এই সময়)