Saharanpur Lok Sabha Seat : চরম মোদী হাওয়াতেও হারে বিজেপি, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তর প্রদেশের এই কেন্দ্র জিততে মরিয়া যোগীরা
এই সময় | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। ভোটে কোন আসনে কোন অঙ্কে জয় আসবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাটাছেঁড়া শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। জোট ভাঙা, গড়ার প্রক্রিয়াও সমানে চলছে। কে কত আসনে জিতবে তা নিয়ে ওলি-গলিতে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। টিকিট পাওয়ার আশায় দলীয় দফতরের চক্কর কাটছেন অনেকেই। বহুজন সমাজ পার্টি ছাড়া এখনও পর্যন্ত উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর আসন থেকে এখনও কেউ প্রার্থী ঘোষণা করেনি। ছয় লাখ ভোটার রয়েছে এই কেন্দ্রে, যা গোটাটাই মুসলিম অধ্যুষিত। এ ছাড়াও দলিত ভোটব্যাঙ্কও রয়েছে এই গুরুত্বপূর্ণ আসনটিতে।২০১৯ সালে মোদী ম্যাজিক সত্ত্বেও BJP সাহারানপুর আসনটিতে পরাজিত হয়েছিল। গত লোকসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টির গঠবন্ধন প্রার্থী হাজি ফজলুরহমান BJP-র রাঘব লক্ষ্মণ পাল শর্মাকে পরাজিত করেন। কংগ্রেসের প্রার্থী প্রাক্তন বিধায়ক ইমরান মসুদ দু'লাখ ভোট পেয়ে কোনওমতে জামানত জব্দ হওয়া বাঁচিয়েছিলেন। ২০২৪-এর লড়াই BJP সাহারানপুর আসন জয়ের লক্ষে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। পিছিয়ে নেই অন্য দলগুলিও।২০১৯ সালে সাহারানপুর আসনে পরাজয় BJP-র৮০ আসনের উত্তর প্রদেশ লোকসভায় BJP-র নজরে এবার সেই ১৭ আসন, যেখানে পরাজিত হয়েছিল পদ্ম প্রার্থীরা। তার মধ্যে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ সাহারানপুর আসন। ২০১৯ সালে হারের দাগ মেটাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। এই আসনে ছয় লাখ মুসলিম, তিন লাখ দলিত ভোটার, দেড় লাখ গুর্জর, সাড়ে তিন লাখ সবর্ণ ছাড়া অন্য জাতির নাগরিকও রয়েছেন।২০১৯ সালের হারের পর BJP এবার সাহারানপুর লোকসভা আসনে জয়ের লক্ষে হেভিওয়েট প্রার্থী দাঁড় করাতে পারে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই আসনে পদ্ম ফোটাতে ভোটারদের মনজয়ের চেষ্টা শুরু করেছে BJP। গত লোকসভা নির্বাচনে হাজি ফজুলরহমান ৫ লাখ ১৪ হাজার ১৩৯ বোটে পেয়েছিলেন। BJP-র প্রার্থী রাঘব লক্ষ্মণ পাল শর্মা পেয়েছিলেন ৪ লাখ ৯১ হাজার ৭২২টি ভোট। তিনি ২০ হাজার ভোটে পরাজিত হন। তিন নম্বর স্থানে ছিলেন কংগ্রেসের ইমরান মাসুদ। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ২ লাখের বেশি।কংগ্রেসের ফলাফলসাহারানপুর আসন ছিল বরাবরই কংগ্রেসের গড়। এ ছাড়াও তিনবার বহুজন সমাজ পার্টি, দু'বার করে BJP, জনতা পার্টির প্রার্থীরা জয়ী হন। বাঁশের মধ্যে হাতে তৈরি অসাধারণ নকশার জন্য সাহারানপুর এলাকা গোটা দেশে বিখ্যাত। এই এলাকার জনসংখ্যার মধ্যে ৫৬ শতাংশ হিন্দু, ৪১ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায় রয়েছেন। সাহারানপুর লোকসভা আসনে প্রথম ১৯৫২ সালে ভোট হয়। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত এই আসনে কংগ্রেস রাজত্ব করে। এর মধ্যে দু'বার অজিত প্রসাদ এবং দু'বার সুন্দরলাল সাংসদ ছিলেন। দেশের জরুরি অবস্থান পর থেকে এই আসন কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত এই আসনে সাংসদ ছিলেন জনতা পার্টির নেতা কাজি রশিদ মসুদ। ১৯৮৪ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের চৌধুরী যশপালকে সিং ফের জয় পান। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত জনতা দলের রশিদ মসুদ, ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত BJP-র নকলি সিং সাংসদ ছিলেন। ১৯৯৯ সালে বহুজন সমাজ পার্টির মসুর আলি খান, ২০০৪ সালে একবার ফের রশি মসুদ সাংসদ হন। ২০০৯ সালে বহুজন সমাজ পার্টির জগদীশ সিং রানা, ২০১৪ সালে BJP-র রাঘব লক্ষ্মণ পাল শর্মা এবং ২০১৯ সালে ফজলুরহমান সাংসদ নির্বাচিত হন।কে কে হতে পারেন সাহারানপুরের প্রার্থী?এখনও পর্যন্ত কোনওরকম অফিসিয়াল ঘোষণা হয়নি। বহুজন সমাজ পার্টির জয়ী সাংসদের বদলে এবার টিকিট দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন জেলা পঞ্চায়েত অধ্যক্ষের স্বামী মজিদ আলিকে। BJP-র প্রাক্তন সাংসদ রাঘব লক্ষ্মণ পাল শর্মা এবং আরও অনেকেই প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেসের জোট ঘোষণার পর এই আসনটিতে হাত শিবিরের ঝুলিতে গিয়েছে। প্রাক্তন বিধায়ক ইমরান মাসুদকে ফের একবার টিকিট দিতে পারে কংগ্রেস।