Gaganyaan Mission: ইতিহাস তৈরির পথে ৪ মহাকাশচারী, গগনযান মিশনের দায়িত্বে থাকা ৪ জনকে চিনুন
এই সময় | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
: গত বছরের অগাস্ট মাসে চাঁদের মাটিতে বিজয় কেতন উড়িয়ে ছিল ভারত। এবার ফের ইতিহাস গড়ার হাতছানি। গগনযান মিশন নিয়ে ক্রমেই বাড়ছে আগ্রহ-উত্তেজনা। কারণ এই মিশনের মাধ্যমেই প্রথবার মহাকাশের বুকে মানুষ পাঠাবে ইসরো। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে চার নভোশ্চরের নাম ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুর তিরুবনন্তপুরমে বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারে এই ঘোষণা করলেন মোদী।ইসরো সূত্রে খবর, ভারতীয় বিজ্ঞানীদের তৈরি 'গগনযান'-এ চেপে মহাকাশে পাড়ি দেবেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন প্রশান্ত বালাকৃষ্ণন নায়ার, গ্রুপ ক্যাপ্টেন অজিত কৃষ্ণন, গ্রুপ ক্যাপ্টেন অঙ্গদ প্রতাপ এবং উইং কমান্ডার শুভাংশু শুক্লা। উইং কমান্ডার কিংবা গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসাবে যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলায় দক্ষ এই চার জন। তবে বেঙ্গালুরুতে বায়ুসেনার নভশ্চর কেন্দ্রে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। বায়ুসেনারই ইনস্টিটিউট অফ এরোস্পেস মেডিসিনে এই চার জনকে বেছে নেওয়া হয়। বাছাই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার তাঁদের নাম ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী।গ্রুপ ক্যাপ্টে প্রশান্ত নায়ার কেরালার পালাক্করের বাসিন্দা। ১৯৭৬ সালের ২৬ অগাস্ট, কেরালার থিরুভাজিয়াদে জন্ম নায়ারের। রাশিয়ায় হিউম্যান স্পেস ফ্লাইট মিশনের জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে উদ্ধৃদ মালয়ালম দৈনিক মাতৃভূমিক একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, নায়ার স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি থেকে। ১৯৯৯ সালে কমিশন্ড অফিসার হিসেবে বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ফাইটার বিমানের পাইলট, সুখোই বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। শুধু রাশিয়া নয়, বেঙ্গালুরুর হিউম্য়ান স্পেস ফ্লাইট সেন্টারেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি।চার নভোশ্চরের মধ্য়ে একজন গ্রুপ ক্যাপ্টেন অজিত কৃষ্ণান। তিনিও নির্বাচিত হয়েছেন গগনযান মিশনের মহাকাশচারী হিসেবে। রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক ও সোর্ড অফ অনার প্রাপক কৃষ্ণান। ২৯০০ ঘণ্টা উড়ানের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।ইসরো সূত্রে খবর, গ্রুপ ক্যাপ্টে অঙ্গদ প্রতাপ গ্রুপের অন্য তিন সদস্যের সঙ্গে ১৩ মাস ধরে রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ২০০০ ঘণ্টা উড়ানের অভিজ্ঞতা রয়েছে অঙ্গদের।গগনযান মিশনের চার নভোশ্চরের মধ্যে একজন উইংক কম্যান্ডার শুভাংশু শুক্ল মস্কোর ইউরি গ্যাগারিন কসমোনট ট্রেনিং সেন্টারে মহাকাশে বিষয়ক একাধিক বিষয়ে ট্রেনিং নিয়েছেন।২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর গগনযানের সফল মহড়া সম্পন্ন হয়েছিল। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতীয় নভোশ্চরদের পাড়ি দেওয়ার কথা মহাকাশে। তবে তাঁদের বাছাইয়ের পর্বটাও ছিল দীর্ঘ। অনেকেই ঐতিহাসিক এই মিশনে অংশ নিতে আবেদন করেছিলেন। সেই দীর্ঘ লাইন থেকে বেছে নেওয়া হয় মাত্র চারজনকেই। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বেঙ্গালুরুতে প্রথম ধাপে বাছাই করা হয়েছিল ১২ জনকে। তারপর তাঁদের মধ্যে থেকে পরবর্তী ধাপে বাছাই করা হয় চার জনকে।বাছাইয়ের পর কঠিন প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছিল মহাকাশচারীদের। গগনযান মিশনের অন্যতম লক্ষ্য আত্মনির্ভর ভারতের সাক্ষ্য সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা। সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে গগনযান। এই মহাকাশযানটিতে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে মহাকাশচারীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাটি আঁটোসাঁটো থাকে।এই মিশনের লক্ষ্য হল পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে মহাকাশচারীদের পাঠানোর। মিশন সফল হলে ভারত হবে চতুর্থ দেশ যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চিনের পর সফল ভাবে নভোশ্চরদের মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হবে।