গজব কহানি! সারমেয়র মতো আচরণ প্রেমিকার! তারপরেও এক পৃথিবী ভালোবাসা প্রেমিকের
এই সময় | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
প্রেমে ফাঁদ পাতা ভুবনে কখন যে কার প্রেমে পড়ে তার ইয়ত্তা নেই। বলা হয়ে থাকে প্রেম মনস্তাত্বিক বিষয। প্রেমের পড়লে ব্যক্তির মনে আসে একাধিক পরিবর্তন। পরিবর্তন আসে তার আচরণেও। যুগ এগিয়ে চলেছে, সম্পর্কের সমীকরণও সেই সঙ্গে পরিবর্তন হচ্ছে। কথায় বলে আজকালকার দিনে প্রেম নাকি বড় ক্ষণস্থায়ী। জেন ওয়াই নাকি প্রেমের তেমন কিছু বোঝেই না। একটু এদিক থেকে ওদিক হলেও সম্পর্কের ইতি। ১০-১২ বছরের প্রেমের সম্পর্ক আজ বড়ই যেন ঠুনকো। তবে একাহিনি আপনার ধারণা বদলে দেবে। এভাবেও ভালোবাসা যায়। টিঁকিয়ে রাখা যায় সম্পর্ক। বান্ধবী আচরণ করে কুকুরের মতো। তবুও তা নিয়ে বিন্দুমাত্র অভিযোগ নেই প্রেমিকের। ঠিক তার 'মতো' করেই ভালোবেসে চলেছেন প্রেমিকাকে।বলছি আমেরিকার ২১ বছর বয়সী জেনার কথা। ছোট্ট বেলায় পাপ্লি প্লে নামে একটি খেলা বড়ই প্রিয় ছিল জেনার। 'পাপ্পি প্লে' কুকুরের মতো আচরণ করে খেলে বেড়ানো। সেই খেলাতেই সারাক্ষণ মেতে থাকতো জেনা। বাবা-মা বরাবরই আপত্তি তুলেছেন মেয়ের এই 'অদ্ভূত' ভালোলাগার খেলা নিয়ে। অনেকবার চেষ্টাও করেছেন যাতে মেয়ের এই খেলার প্রতি আকর্ষণকে ঘোরানো যায়। তবে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। মেয়েও এই খেলা ছাড়েনি। ছোট থেকে বড় হয়ে যাওয়া পরেও চলছে সেই 'পাপ্পি প্লে'। ঘরে-বাইরে সারাক্ষণ কুকুরের মতো আচরণ করেন তিনি। যেমন চার পায়ে হাঁটার চেষ্টা (হাঁটু মুড়ে-হাত নীচে), কুকুরের মতো শব্দে ডাকা, জিভ বের করে হাঁপানো ইত্যাদি। জেনা নিজে মুখেই জানিয়েছেন, ছোট থেকেই এই খেলা তার বড্ড প্রিয়। বাবা-মা বহুবার এই খেলা ছাড়তে বলেছেন তাঁকে। তবে তিনি সেসব কথায় কান দেননি। নিজের মনের কথা শুনেই দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন সেখেলা। এতো গেল খেলার কথা। কিন্তু যে মেয়ের এমন আচরণ, তাঁকে ভালোবাসবে কে? সমাজ তো এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর! এই সবকিছুকে মেনে নিয়ে তাঁকে ভালোবাসেন এক যুবক। প্রেমিকার অদ্ভূত আচরণ নিয়ে কোনও ক্ষোভ, অভিযোগ কিছুই নেই তাঁর। প্রেমিকা যেরকম সেরকম ভাবেই তাকে গ্রহণ করতেই প্রস্তুত তিনি। জেনার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। সেখানে তিনি নিজের কুকুরের মতো আচার-আচরণ ব্লগ তুলে ধরেন। কখনও দেখা যায়, তাঁকে প্রভুর মতো চেন দিয়ে বেঁধে রাস্তায় নিয়ে চলেছেন লরেঞ্জো, কখনও আবার গদ গদ হয়ে পোষা কুকুরের মতো লরেঞ্জোকে আদর করছেন জেনা।৩০ বছরের প্রেমিক লরেঞ্জোর সঙ্গে থাকেন জেনা। লরেঞ্জার কথায়, তাঁর প্রেমিকা যেমনি আচরণ করুন না কেন ভালোবাসায় একটুও খামতি হবে না। লরেঞ্জোর কথায়, 'আমরা অনেক সময় অনেক মানুষের মাঝে গিয়েও বিব্রত বোধ করি। একটি মেয়ে যদি কুকুরের মতো আচরণ করে তবে কি সেটা খুব অদ্ভূত? আমার কাছে এটা কোনও অদ্ভূত ব্যাপারই না।' তবে একে অপরকে এক পৃথিবী ভালোবাসলেও সমাজ তো চুপ করে বসে থাকে না। হাজার কটাক্ষ, সমালোচনা, মুচকি হাসি ধেয়ে আসে। তবে সেসব কিছুকেই আমল দিতে নারাজ দু'জন। একে অপরের মধ্যে বোঝাপড়া যখন এতটাই মজবুত তখন কে কী বলল, যায় আসে না কিছুতে।' দুই জনকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপের সম্মুখীন হতে হয়েছে।জেনার সাফ জানিয়েছেন, তাঁর এই অদ্ভূত আচরণ নেই কোনও সমস্যা নেই তাঁর প্রেমিকার। প্রথম যখন তাঁর এই অদ্ভূত ভালোলাগা-আচরণের কথা জানিয়েছিলেন তখন কোনও আপত্তি তোলেননি লরেঞ্জো। বরং হাসিমুখেই মেনে নিয়েছে গার্লফ্রেন্ডের সব ভালোলাগাকে-আপন করেছেন সবটা। জেনার কথায়, 'আমি জানি আমার আচরণের মাধ্য়মে আমি কাউকে আঘাত করছি না। আমার কোনও সমস্যাও নেই। আমি যা করতে ভালোবাসি তা আমি নেট মাধ্যমে তুলে ধরি। মানুষ সেখানে নিজের মতামত জানান। কুকুরকে পার্কে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সকলের কাছে খুব কমন। আমারও মাঝে মধ্যে কুকুরে মতো আচার-আচরণ করতে ভালো লাগে। আর তখন লরেঞ্জোও দুর্দান্ত মালিকের আচরণ করে। ঠিক যেমন পোষ্যকে যত্ন নেয় তার মালিক আমারও তখন সেভাবে যত্ন নেয় তখন ও। আমি লরেঞ্জোর কাছে তখন সব থেকে ভাগ্যবান পোষ্য বলে নিজেকে মনে করি।'