গত সপ্তাহে শুভেন্দু অধিকারী সন্দেশখালি যাওয়ার পথে ধামাখালিতে বিজেপির বিক্ষোভ থেকে আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিংকে উদ্দেশ করে ‘খালিস্তানি’ মন্তব্য ছুড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আজ, বৃহস্পতিবার ফের বিধানসভার বিরোধী দলনেতার সন্দেশখালি সফরের আগে কলকাতা হাইকোর্টে সেই বিতর্ককেই হাতিয়ার করল রাজ্য প্রশাসন।যদিও বিচারপতি কৌশিক চন্দ রাজ্যের আপত্তি খারিজ করে শর্তসাপেক্ষে শুভেন্দুকে সন্দেশখালির জেলিয়াখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের হালদারপাড়ায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশ, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সেখানেও গেলেও আগের মতো সব বিধিনিষেধ মেনেই সেখানে যেতে হবে। পুলিশের কাছে অঙ্গীকারপত্রও জমা দিতে হবে।পাশাপাশি সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের মতো প্রায় একই যুক্তিতে এদিন হাইকোর্টে জামিন পান বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহ। আবার আইএসএফ নেত্রী আয়েষা বিবির জামিন মঞ্জুর করেছে বসিরহাট মহকুমা আদালত। এই দু’জনের ক্ষেত্রেই আইনজীবীরা মঙ্গলবার নিরাপদর জামিন মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের পর্যবেক্ষণকে হাতিয়ার করেছেন।আইনজীবীদের যে সংগঠনকে সন্দেশখালি যাওয়ার আগেই কলকাতা পুলিশ ভোজেরহাটে আটকে গ্রেপ্তার করেছিল, ৩ মার্চ তাদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই দলে পাটনা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সহ বেশকিছু ভিন্ন পেশার ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। বিচারপতি চন্দ এই অনুমতি দেওয়ার আগে জানতে চান, এই সংগঠনে কারা আছেন? তাঁরা কেন যাবেন?পরে তিনি জানান, ১৪৪ ধারা না থাকলে যে কেউ যেতে পারেন। ছ’সদস্যের প্রতিনিধি দলকে সন্দেশখালির মাঝেরপাড়া, নতুনপাড়া ও নস্করপাড়ার রাসমন্দিরে যাওয়ার অনুমতি দেয় আদালত। সন্দেশখালিতে গোলমালের সঙ্গেই গত সপ্তাহে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়েছিল বিজেপির বিক্ষোভ থেকে ‘খালিস্তানি’ মন্তব্যের অভিযোগকে কেন্দ্র করে। এই ঘটনায় ভবানীপুর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।পাশাপাশি শুভেন্দুর বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়েরের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। এদিন হাইকোর্টের শুনানিতে সে প্রসঙ্গও তোলা হয় রাজ্যের তরফে। রাজ্যের সওয়াল, শুভেন্দু অধিকারী আগে যেদিন আদালতের অনুমতি নিয়ে সন্দেশখালি গিয়েছিলেন, সেদিন সেখানে অনেক লোকের জমায়েত হয়েছিল। সেখানেই তিনি পুলিশ আধিকারিকদের উদ্দেশে কুমন্তব্য করেছেন।সে বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ করছি। রাজ্যের আরও অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ মানেননি শুভেন্দু। পুলিশের উদ্দেশে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন। তিনি একজন আইপিএসকে ‘খালিস্তানি’ বলেছেন। শুভেন্দুর আইনজীবীর পাল্টা বক্তব্য, এই অভিযোগের সপক্ষে কোনও প্রমাণ থাকলে দেখাক রাজ্য। বিচারপতির বক্তব্য, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা গেলে এলাকার মানুষ তো আসবেনই।হাইকোর্ট এও বলে,✓এটা ঠিক, যে আদালতে বসে বাস্তব পরিস্থিতির বিবেচনা করা যায় না। পুলিশকে-প্রশাসনকেই কাজ করতে হয়। কিন্তু সেটা অনেক সতর্ক হয়ে করতে হয়। শুভেন্দুর আইনজীবীর বক্তব্য, মক্কেলের রক্ষাকবচের বিরুদ্ধে রাজ্য চারবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। প্রতিবারই সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।