৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে ED-রেশন দুর্নীতি মামলায় প্রথম শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। কিন্তু, সেই সময় কিছু মানুষের হাতে আহত হয়ে ED আধিকারিকদের ভর্তি হতে হয়েছিল হাসপাতালে। সেই থেকে শুরু-সন্দেশখালির 'বাঘ' হিসেবে উঠে আসে শেখ শাহজাহানের নাম। প্রত্যন্ত গ্রামে তাঁর 'তর্জন গর্জন'-এর কাহিনী রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো।কে এই শেখ শাহজাহান?স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন, কে এই শেখ শাহজাহান? তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষ। পাশাপাশি সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি।কিন্তু, তাঁর রাজনৈতিক উত্থান ছিল নজরকাড়া। সালটা ২০০৩- তিনি সন্দেশখালি-সরবেড়িয়া রুটে একটি ট্রেকারের হেল্পার ছিলেন। তাঁর মামা ছিলেন পঞ্চায়েতের সদস্য। আর সেই সূত্র ধরেই তিনি মাছের ভেড়ির ব্যবসায় নামেন। আর তাতেই নাকি লক্ষ্মীলাভ হতে শুরু করে তাঁর। এদিকে শাহজাহানকে নিয়ে দুটি তত্ত্ব উঠে আসছে। এলাকাবাসীর কিছু অংশ দাবি করছেন, গরিবদের নাকি অতীতে বহু সাহায্য করেছেন তিনি।ব্যবসায় লক্ষ্মীলাভ করার পর রাজনীতিতে ধীরে ধীরে প্রবেশ করেন শাহজাহান। বাম জমানা থেকে তাঁর রাজনৈতিক উত্থান। সেই সময় স্থানীয় বিধায়ক অনন্ত রায়ের আস্থাভাজন ছিলেন তিনি, উঠে এসেছে এমনই তত্ত্ব। ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর তৃণমূলে যোগদান। সেই সময় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরেই তাঁর ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখানো বলে দাবি স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের। বাম জমানাতে তিনি বিধায়ক ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু, কোনও পদে তিনি ছিলেন না।এলাকায় তাঁর প্রভাব ছিল নজরকাড়া। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শেখ শাহজাহানকে প্রার্থী করা হয়। তিনি নির্বাচনে জিতে কর্মাধ্যক্ষ হন। এলাকাবাসীর শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তবে কোনওভাবেই তাঁর প্রতাপ অস্বীকার করার মতো নয়।তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের পালটা হুংকার দিয়েছিলেন, সন্দেশখালিতে এসে দেখাক কার বুকের পাটা কত? ED যাওয়ার পর সত্যি সত্যিই 'দাদা'-র সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন অনেকেই। এমনকী, আধিকারিকদের উপরে হামলার ঘটনাও ঘটে। যদিও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বদলে যায় পরিস্থিতি।শেখ শাহাজাহানের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন এলাকাবাসী। শুধু তাই নয়, একে একে উত্তম সর্দার, শিবপ্রসাদ হাজরাদের মতো নেতাদের নামও উঠে এসেছিল। তাঁদের ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এবার গ্রেফতার হলেন শাহজাহানও।