বঙ্গে মহিলা ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা, মোদীর মুখে 'লাখপতি দিদি'
এই সময় | ০৬ মার্চ ২০২৪
সামনেই নারী দিবস। আর তার প্রাক্কালে বারাসতে নারী শক্তির জয়গান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ভাষণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছত্রে ছত্রে উঠে এল নারী বন্দনা। বারাসতে দাঁড়িয়ে একদিকে যেমন তাঁর গলায় ধরা পড়ল সন্দেশখালি প্রসঙ্গ, তেমনই উঠে এল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে মহিলাদের জন্য নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথাও।মনে রাখতে হবে বিগত সময়ে রাজ্যে সরকারকে তাদের বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে মহিলাদের উন্নয়নের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। একদিকে যেমন রাজ্য বাজেট লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো প্রকল্পের টাকা ডাবল করা হয়েছে, তেমনই বুধবার সকালে আশা কর্মী এবং আইসিডিএস কর্মীদের বেতন বাড়ানোর কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রে, আশা এবং আইসিডিএস কর্মীদের জন্য মাসিক বেতন ৭৫০ টাকা করে বাড়ানোর ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপশি, ICDS হেল্পারদের বেতন বাড়ান হয়েছে মাসে ৫০০ টাকা। এছাড়াও রাজ্যের ছাত্রীদের জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্পও রয়েছে সরকারের। যার ফলেও উপকৃত হন একটা বড় অংশের পড়ুয়া। রাজনৈতিকমহলের একাংশ মনে করছে, এই ধরনের একের পর এক স্কিমের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন নির্বাচনে মহিলা ভোটারদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী আসন্ন লোকসভা নির্বাচনেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু নেই বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কারও কারও।
আর সেক্ষেত্রে মহিলা ভোটারদের আশার্বাদ পেতে যে বিজেপিও এবার চেষ্টার কোনও খামতি রাখবে না তা কার্যত নরেন্দ্র মোদীর বারাসতের ভাষণেই স্পষ্ট বলে মনে করছে ওয়াকিবহালমহল। এদিন ভাষণের শুরুতেই সভায় বিশাল সংখ্যাক মহিলা জমায়েত হওয়ার কারণে তাঁদের ধন্যবাদ জানান মোদী। একইসঙ্গে বাংলার সমস্ত মা ও বোনেদের নিজের পরিবার বলেও উল্লেথ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপি নারী শক্তিকে বিকশিত ভারতের শক্তি তৈরি করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে এদিন ফের একবার উঠে আসে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। তিনি অভিযোগ করেন, সন্দেশখালিতে যা ঘটেছে, তাতে যে কোনও কারও মাথা হেঁট হয়ে যাবে না। যদিও তাতে কিছু যায় আসে না তৃণমূলের। এমনকী সন্দেশখালির ঝড় গোটা বাংলায় উঠবে বলেও দাবি করেন তিনি। যদিও শুধু সন্দেশখালির মধ্যেই নিজে ভাষণ সীমাবদ্ধ রাখেননি মোদী। মহিলাদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে সমস্ত উন্নয়নমূলক উদ্যোগ নিয়েছে, সেগুলেও ফের একবার তুলে ধরেন তিনি। উঠে আসে উজ্জ্বলা যোজনা, লাখপতি দিদির মতো প্রকল্পগুলির কথা। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, একদিকে তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারের সমালোচনা, অন্যদিকে এনডিএ সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা তুলে ধরে, আদতে নারী শক্তির মন জয়েরই চেষ্টা করলেন মোদী। আর এখানে আরও একটি বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন। তা হল, বারাসতে বর্তমান সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। সেক্ষেত্রে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র যদি কাকলিই ফের তৃণমূলের প্রার্থী হন, তাহলে নারী শক্তির দ্বারাই তাঁকে পর্যদুস্ত করার বীজও মোদী বপন করা চেষ্টা করলেন বলেই মনে করছেন কেউ কেউ।