প্রচারে প্রকৃতি রয়েছে? দেখে তবেই সমর্থন পরিবেশবিদদের
এই সময় | ০৬ মার্চ ২০২৪
এই সময়: রাজনীতির নাগপাশ থেকে পরিবেশ-বাস্তুতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনকে মুক্ত করার ডাক দিয়ে থাকেন পরিবেশকর্মীরা। লোকসভা ভোটের মুখে পরিবেশকে বাঁচাতে এ বার রাজনীতির কারবারিদের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন তাঁরা। শর্ত একটাই, সেই রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনী ইস্তেহারে পরিবেশকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং নির্বাচনী প্রচারে তাঁদের প্রার্থীরা পরিবেশ নিয়ে ভোটারদের সচেতনও করবেন। এই দুটি শর্ত পূরণ হলেই প্রার্থীদের পাশে থাকবেন আন্দোলনকারীরা। তাই নয়, রাজনৈতিক প্রার্থীদের হয়ে মিছিল-সভা করতে পিছপাও হবেন না পরিবেশকর্মীরা।অভিযোগ, পরিবেশ এবং বনাঞ্চল রক্ষায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সম্প্রতি যে আইনি সংশোধন এনেছে, তাতে পরক্ষে ক্ষতিই হচ্ছে পরিবেশের। অন্যদিকে ঘুরপথে মুনাফা লুটছে কর্পোরেট সংস্থাগুলি। কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বেশ কিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। 'নদী বাঁচাও, জীবন বাঁচাও আন্দোলন' সংগঠনের সদস্যদের বক্তব্য, এ রাজ্যে অবৈজ্ঞানিক ভাবে খাদান থেকে বালি তোলা হচ্ছে, উপকূলবর্তী জেলায় ভেড়িতে মাছ চাষের নামে নোনা জল ঢুকিয়ে চাষের জমি নষ্ট করা এবং ডেউচা পাচামিতে কয়লা খাদান সহ বিভিন্ন কারণে পরিবেশের বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে এই লড়াই। ডাক দেওয়া হয়েছে, যে দল পরিবেশ বাঁচাতে এগিয়ে আসবে, আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করা হয়। সংগঠনের তরফে তাপস দাস বলেন, 'আত্রেয়ী নদীর উপর নির্মীয়মাণ চেক ড্যাম নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করবে। আবার ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায় সিদ্ধেশ্বরী নদীর উপর নির্মীয়মাণ ব্যারেজও নদীর স্বাভাবিক গতিকে নষ্ট করবে। এ ভাবে গোটা দেশজুড়ে পরিবেশের দফারফা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোকেই এজন্য এগিয়ে আসতে হবে। যে দল পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসবে, আমরাও তাদের জন্য গলা ফাটাব।' একই সুর পরিবেশকর্মী কল্লোল রায়ের গলাতেও।
তিনি বলেন, 'সুন্দরবন, পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে জমির চরিত্র পাল্টে ফেলা হচ্ছে। সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতিও হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে আমাদের। ভোটের প্রচারে এগুলো আনা দরকার।' অধ্যাপক অমিতাভ সেনগুপ্তের কথায়, 'সংরক্ষিত অরণ্যে যে ভাবে অনুপ্রবেশের সমস্ত দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে, তাতে আখেরে লাভ হচ্ছে কর্পোরেটদের। যারা অরণ্যবাসী অর্থাৎ বনাঞ্চলের আশপাশে থাকেন, তাঁদের বিষয়ে কোনও চিন্তাভাবনা হচ্ছে না। কেন্দ্র অরণ্য সংরক্ষণ আইনের যে পরিবর্তন করেছে, তাতে আমরা বিপদের সামনেই দাঁড়িয়ে রয়েছি। এজন্য ১৯৮০ সালের অরণ্য সংরক্ষণ আইনের সংশোধনী প্রত্যাহার করতে হবে।'