গগনযানের প্রস্তুতিতে ইসরো। গগনযান মিশনে যে চার মহাকাশচারী অংশ নিতে চলেছেন সম্প্রতি তাঁদের সঙ্গে দেশবাসীর পরিচয় করে দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গগনযান মিশনই হতে চলেছে ভারতের প্রথম মনুষ্যবাহী মিশন। এই মিশনের মাধ্যমে প্রথমবার নভোশ্চরদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মহাকাশে পাঠাবে ইসরো। তারপর তাঁদের নির্দিষ্ট সময় পরে ফিরিয়ে আনা হবে। সবার আগে যে বিষয়টি বার বার দেখে নেওয়া হচ্ছে তা হল নভোশ্চরদের সুরক্ষার দিকটি। তাঁদের সুরক্ষার দিকটির সঙ্গে কোনও রকম ভাবে আপস করতে নারাজ ইসরো। নভোশ্চরের সুরক্ষায় একাধিকবার ট্রায়াল উড়ানের মহড়াও চলছে। সবগুলি পরীক্ষা সফল হলে তবেইও মহাকাশে পাঠানো হবে নভোশ্চরদের। মিশনে কোনও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি হলে মহাকাশচারীদের নিরাপদ অবতরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন সামুদ্রিক স্থানে ৪৮টি সম্ভাব্য অবতরণের অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অবতরণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে আরব সাগরকে। অর্থাৎ মিশন শেষে আরব সাগরে মহাকাশচারীদের অবতরণ করানোর ব্যবস্থা করা হবে। তারপর সেখান থেকে তাঁদেরকে উদ্ধার করে ডাঙায় ফিরিয়ে আনবে নৌবাহিনীর সদস্যরা।গগনযান মিশনের নিরাপদ অবতরণের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা
গগনযান মিশন যে চার নভোশ্চর মহাকাশে পাড়ি দেবেন তাঁরা হলেন প্রশান্ত নায়ার, অঙ্গদ প্রতাপ, অজিত কৃষ্ণান এবং শুভাংশু শুক্লা। ২০২৫ সালের শেষের দিকে চূড়ান্ত গগনযান মিশনের কথা রয়েছে। ইসরোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিশনের একেবারে শেষ পর্যায়ে মহাকাশচারীরা যাতে নিরাপদে অবতরণ করতে অর্থাৎ পৃথিবীতে আবার ফিরে আসতে পারেন তার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মহাকাশচারীদের নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে আরব সাগরে প্রাথমিক ল্যান্ডিং জোন তৈরি করা হয়েছে। এজন্য ভারতীয় এজেন্সিগুলো যে কোনও জরুরির পরিস্থিতি সম্বন্ধে সম্পূর্ণ সতর্ক থাকবে। মিশনটি যাতে কোনও সমস্যার সম্মুখীন না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য, ৪৮টি আন্তর্জাতিক ল্যান্ডিং সাইট নির্বাচন করা হয়েছে।
কেন ব্যাকআপ প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে তা জানিয়েছেন ইসরো কর্তারা
গগনযান মিশনের বিষয়ে ইসরোর এক সিনিয়র আধিকারিক জানিয়েছেন, যে কোনও মিশনে একটি আদর্শ পরিস্থিতি থাকে। এর পাশাপাশি সতর্কতা ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে একটি ব্যাকআপ প্ল্যানও তৈরি করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গগনযান মিশনের শেষে মহাকাশচারীদের আরব সাগরে অবতরণের কথা রয়েছে। মিশনে মহাকাশচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। মিশনের সময় যদি সামান্য পরিবর্তন হয় তবে ক্যাপসুলটি কয়েকশো কিলোমিটার দূরে অবতরণ করানো যেতে পারে।
কী কী প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে গগনযান মিশন নিয়ে?
মডিউলের কার্যকারিতা এবং মহাকাশচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গগনযান মিশনের আগে ইসরো একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে। বর্তমানে চার মহাকাশচারীর প্রশিক্ষণ চলছে বেঙ্গালুরুতে। গগনযান মিশন সফল হলে ভারতই হবে চতুর্থ দেশ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের পর মহাকাশে মানুষ পাঠানোর কৃতিত্ব অর্জন করবে। এই মিশনের মাধ্যমে নভোশ্চরদের পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পাঠানো হবে। এই মিশনের জন্য যে মহাকাশযান তৈরি করা হয়েছে সেটিতে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।