• Lok Sabha Election 2024: শশী থারুরকে হারাতে মরিয়া BJP, 'জায়ান্ট কিলিং'-এ বড়সড় চমক মোদী-শাহর
    এই সময় | ০৭ মার্চ ২০২৪
  • Shashi Tharoor vs Rajeev Chandrasekhar: এগিয়ে আসছে লোকসভা নির্বাচন। নির্ঘণ্ট প্রকাশ না হলেও গত সপ্তাহেই প্রথম দফায় ১৯৫ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপির প্রথম প্রার্থী তালিকায় নাম রয়েছে ৩৪ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরের নামও। কেরলের তিরুবনন্তপুরম থেকে প্রার্থী হয়েছেন রাজীব। এদিকে এটি আবার কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একাই ৩৭০ আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। সেই লক্ষ্য পূরণে এবার দুর্বল জমিগুলি ফোকাসে রাখছে গেরুয়া শিবির। দক্ষিণের রাজ্যগুলি বিজেপির জন্য মোটেও নরম মাটি নয়। তাই আগেভাগে সেই শক্ত মাটিতে খুঁটি পুঁতে জায়গা করে নিতে চাইছে বিজেপি। কংগ্রেসকে এক টুকরো জমি ছাড়তে নারাজ গেরুয়া বিগ্রেড। তার জন্য কংগ্রেসের হেভিওয়েট শশী থারুরের গড়ে যে আর এক 'জায়ান্ট কিলার'-কে দাঁড় করিয়ে বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি তা জলের মতোই স্পষ্ট।যদিও এখনও পর্যন্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি হাত শিবির। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মত, যদি থারুরকেই তিরুবনন্তপুরম থেকে আরও একবার টিকিট দেয় কংগ্রেস তবে সেখানে দুই হাই প্রোফাইল নেতার মধ্যে 'টাফ কনটেস্ট'-এর আগাম পূর্বাভাস করাই যায়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেরালা থেকে একটি আসনও পকেটে পুরতে পারেনি গেরুয়া বিগ্রেড। সম্প্রতি কেরালা সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক ভাষণে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে দুই অঙ্কের আসন জয়ের টার্গেট সেট করে দিয়েছেন। রাজীব চন্দ্রশেখর বর্তমানে কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনবার রাজ্যসভার সদস্য মনোনীত হয়েছেন। প্রথমবার ২০২৪-এই তিনি লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ২০০৯ সাল থেকে এই আসন থেকে টানা তিনবার জয়ী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কংগ্রেস শশী থারুর।

    কেরালায় জন্ম নয়

    চন্দ্রশেখর ও থারুর দুইজনই কেরালার বাসিন্দা তবে সেখানে তাঁদের জন্ম নয়। গুজরাটের আহমেদাবাদে মালয়ালি পরিবারের জন্ম চন্দ্রশেখরের। পৈতৃক বাড়ি কেরালার ত্রিশুর জেলার কোন্ডায়ুরে। অন্যদিকে বিদেশের মাটিতে তথা লন্ডনে জন্ম নেন শশী থারুর। চন্দ্র থারুর এবং সুলেখা মেননের পুত্র তিনি। তাঁরা আবার কেরালার পালাক্কাড়ের মালয়লি দম্পতি।

    মণিপাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে তার ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষের পর চন্দ্রশেখর শিকাগোর ইলিনয় ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ১৯৮৮ সালে ইন্টেলে যোগ দেন। ১৯৯১ সালে ভারতে ফিরে আসেন। এরপর যোগ দেন শ্বশুরের কোম্পানি বিপিএল গ্রুপে। ২০০৫ সালে বিপিএল কমিউনিকেশনে তার ৬৪ শতাংশ শেয়ার ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসসার গ্রুপের কাছে বিক্রি করেন। ২০০৫ সালে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রাথমিক বিনিয়োগের সঙ্গে চন্দ্রশেখর প্রতিষ্ঠা করেন জুপিটার ক্যাপিটাল।

    অন্যদিকে, শশী থারুর পড়াশোনা করেছেন তামিলনাড়ুর সালেমের ইয়েরকাডের মন্টফোর্ট স্কুল এবং মুম্বাইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুলে। নয়া দিল্লির সেন্ট স্টিফেন কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেডফোর্ডের টাফ্টস ইউনিভার্সিটির ফ্লেচার স্কুল অফ ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন থারুর। এছাড়াও আইন ও কূটনীতিতে স্নাতকোত্তর এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বিষয়ে পিএইচি করেছেন।

    ১৯৭৮ সালে জেনেভায় রাষ্ট্র সংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (UNHCR) স্টাফ সদস্য হিসেবে কর্মজীবন শুরু হয় থারুরের। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে থারুর আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০০৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকার থারুককে ইউএন সেক্রেটারি জেনারেল পদে মনোনীত করে।

    রাজনৈতিক জীবন

    ২০০৬ সালে কর্নাটকের প্রতিনিধিত্ব করে রাজ্যসভার একজন স্বতন্ত্র সদস্য হিসাবে চন্দ্রশেখরের সংসদীয় যাত্রা শুরু হয়। ২০১৮ সালে বিজেপির সদস্য হিসেবে রাজ্যসভায় তৃতীয় মেয়াদে পুনরায় নির্বাচিত হন। মোদীর সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২১ সালের জুলাই মাসে মন্ত্রিসভা রদবদলের পরে প্রতিমন্ত্রী হন। বরাবরই সুবক্তা হিসেবে পরিচিতি রয়েছে চন্দ্রশেখরের। অন্যদিকে শশী থারুর ২০০৯ সালে কেরালার তিরুবনন্তপুরম থেকে তাঁর প্রথম লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রায় ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন। ২০১৪ সালে বিজেপির প্রবীণ নেতা ও রাজাগোপালের বিপরীতে দাঁড়ান। সেবার অবশ্য জয়ের ব্যবধান অনেকটাই কম ছিল। বিজেপি প্রার্থীকে ১৫ হাজার ৪৭০ ভোটে পরাজিত করেন থারুর। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী কুম্মানম রাজশেখরনকে পরাজিত করেন থারুর।
  • Link to this news (এই সময়)