ফের নাম না করে নিজের প্রাক্তন স্বামী তথা বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁকে নিশানা করলে সুজাতা মণ্ডল। 'জনগর্জন সভা'র প্রচারে ইন্দাসে এক দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সুজাতা মণ্ডল বলেন, জীবনে সুজাতা কোনও দিন আপনাদের কাছে কিছু চাইতে আসবে না, শুধু ওই নোংরা লোকটাকে এবারে হারিয়ে এখান থেকে বিদায় করুন।' দলমত নির্বিশেষ বিজেপি, সিপিআইএম, কংগ্রেস, তৃণমূল সহ সাধারণ মানুষের কাছে এই আবেদন জানান সুজাতা মণ্ডল।সুজাতা আরও বলেন, 'সবার উপরে স্বামী, একথা ভেবেই গত পাঁচ বছর আগে কোনও কিছু চিনতাম না, তবুও প্রখর রৌদ্রের মধ্যে পা দিয়ে রক্ত বেরত, তারপরেও লাগাতার প্রচার চালিয়ে গিয়েছি। সেদিনের সেই লড়াই আমার তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছিল না, একটা পরিবারের কর্তব্য, একটা নারীর কর্তব্য।' পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুজাতা আরও বলেন, 'গত পাঁচ বছর বিষ্ণুপুরের মানুষ সাংসদকে পায়নি, এমনকী তাঁর দলের লোকেরাও তাঁকে অসময়ে পায়নি। বাবা ষাঁড়েশ্বর ওকে তুলেছিলেন, বাবা ষাঁড়েশ্বরই ওর নামের পাশে প্রাক্তন সাংসদ বসিয়ে দেবেন।'
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেও সৌমিত্রর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান সুজাতা। সেই সময় ৫ বছরে সাংসদ তহবিলের টাকার খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। সুজাতা দাবি করেন, ৫ বছরে সাংসদ তহবিলে যে ২৫ কোটি টাকা সৌমিত্র খাঁ পেয়েছেন, তার মধ্যে মাত্র ১০ কোটি টাকা খরচ করেছেন। তাই বাকি ১৫ কোটির টাকার হিসেব চান সুজাতা। একইসঙ্গে যে ১০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, সেটা কোন খাতে খরচ করা হয়েছে, তাও জানতে চান তিনি। যদিও সুজাতার সেই অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দেন সৌমিত্র খাঁ। তিনি পালটা দাবি করেন, ১০ নয়, ২০ কোটি কাটা খরচ করা হয়েছে।
এদিকে সৌমিত্রকে ফের টিকিট দেওয়াকে ঘিরে বিজেপির অন্দরেও ক্ষোভের আঁচ। যার জেরে ইন্দাসে বিজেপির এক প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি সহ ৬০টি পরিবারের শতাধিক বিজেপি কর্মী যোগ দিলেন তৃণমূলে। ফলে লোকসভা নির্বাচনের আগেই ভাঙন গেরুয়া শিবিরে। ইন্দাসে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে 'জনগর্জন সভা'র প্রস্তুতি কর্মসূচি চলছিল। সেখানেই এলাকার ৬০টি পরিবারের প্রায় শতাধিক বিজেপি কর্মী এবং এক প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি যোগদান করেন রাজ্যের শাসকদলে। দলের ইন্দাস ব্লক সভাপতি শেখ হামিদের হাত ধরে এই যোগদান হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। তৃণমূলের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে সৌমিত্র খাঁকে ফের টিকিট দেওয়ার প্রতিবাদেই তাঁরা বিজেপি ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করেছেন।
যদিও ঘটনায় পালটা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, 'বিজেপি থেকে কোনও কর্মী তৃণমূলে যোগদান করেনি। যাঁরা যোগদান করেছেন তাঁরা তৃণমূলেরই কর্মী ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তাছাড়া যাঁরা বলছেন সাংসদ এলাকায় কাজ করেননি, তাঁরা হয়ত চোখে দেখতে পান না।'