• Kolkata Metro: নতুন মেট্রোর ধাক্কা সামলানো নিয়ে আশঙ্কায় বাস-মালিকরা
    এই সময় | ০৭ মার্চ ২০২৪
  • কুবলয় বন্দ্যোপাধ্যায়প্রথমে খালি বাসে কিছুক্ষণ অপেক্ষা, তার পর ড্রাইভারের মনে হলে ‘স্টার্ট’। তার মানে অবশ্য এগোনো নয়, একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আরও কিছুক্ষণ শুধু ঘড়-ঘড় শব্দ। তারও পরে অবশেষে কোনও রকমে নিজেকে টেনে নড়াচড়া শুরু করে বাস। এগোনো অবশ্য খুবই ধীরে। ধর্মতলা-হাওড়া-ধর্মতলা রুটের বাসযাত্রীদের নিত্যদিনের অভিজ্ঞতা এমনই। পাক্কা ৫০ মিনিটের ধাক্কা সামলে গলদঘর্ম হয়ে বাস থেকে নামাই এই রুটে দস্তুর।

    বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত অংশে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পর ছবিটা বদলানোর আশা জেগেছে সেই নিত্যযাত্রীদের মনে। ভিড় বাসে ধীর গতিতে ঘামতে ঘামতে যাতায়াতের বদলে এসির ঠান্ডায় কয়েক মিনিটে হাওড়া থেকে এসপ্ল্যানেড পৌঁছনোর আশায় যখন খুশি যাত্রীরা, তখন প্রবল আশঙ্কায় বাস-মালিকরা।

    যদি কয়েক মিনিটেই হাওড়া ময়দান এবং বিশেষ করে হাওড়া স্টেশন থেকে এসপ্ল্যানেড পৌঁছে যাওয়া যায়, তা হলে কেন যাত্রীরা একই ভাড়ায় বাসে চাপার বিরক্তি সহ্য করবেন--এ প্রশ্ন ঘুরছে বাস-মালিকদের মাথায়। শুধু হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড রুটই নয়, কলকাতা মেট্রোর পার্পল লাইনে এতদিন জোকা থেকে তারাতলা পর্যন্ত মেট্রো চলছিল। এ বার সেই রুটও সম্প্রসারিত হলো মাঝেরহাট পর্যন্ত।

    জোকা-মাঝেরহাট রুটের বাসযাত্রীদের বড় অংশও এ বার মেট্রোর সুযোগ নেবেন বলে মনে করছেন বেসরকারি বাসমালিকদের অনেকে। কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘আরও বেশ কয়েকটি রুটেও দ্রুত কাজ এগোচ্ছে। ২০২৬-এর মধ্যে কলকাতার যান-মানচিত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন আসতে চলেছে।’

    এই প্রেক্ষিতে বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠন অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘মেট্রোর প্রকল্প শহর তথা রাজ্যের জন্য মঙ্গলজনক। আমরা কখনওই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করব না। বহুদিন ধরেই বেসরকারি বাস পরিষেবায় কঠিন সময় চলছে। আমাদের প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হলো। পরিষেবা চালাতে আমরা রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের কোনও সাহায্য পাই না। আগামী দিনে আশা করব আমাদের অস্তিত্বরক্ষার বিষয়টা ওঁরা ভাববেন।’

    বেসরকারি বাসমালিকদের অন্য সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস-মিনিবাস কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘আমাদের লড়াই আরও কঠিন হলো, এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। তবে দমদম থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত অংশে মেট্রো চালু হওয়ার পরেও যেমন ওই রুটে বাস বন্ধ হয়নি, তেমনই এই সব রুটেও বাস থেমে যাবে না। তবে যাত্রীসংখ্যা কমবে বলেই আশঙ্কা।’
  • Link to this news (এই সময়)