স্ত্রীকে ঘরের কাজ করাতে বাধ্য করা নিষ্ঠুরতা নয়: হাইকোর্ট
এই সময় | ০৭ মার্চ ২০২৪
গৃহস্থালির কাজে স্ত্রীর অনিহা এবং বাবা-মা থেকে স্বামীকে আলাদা থাকতে বলা সংক্রান্ত একটি মামলায় দিল্লি হাইকোর্টের তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সামনে এসেছে। স্ত্রীর কাছ থেকে স্বামীর গৃহস্থালির কাজের প্রত্যাশা, নিষ্ঠুরতা নয় বলে জানাল উচ্চ আদালত। এরই পাশাপাশি স্বামীকে তাঁর মা-বাবা থেকে আলাদা থাকতে বলা নিষ্ঠুরতার সমান বলে পর্যবেক্ষণে জানানো হয়েছে।
কী বলেছে আদালত
বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, বিয়ের উদ্দেশ্য হল ভবিষ্যত জীবনের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া। সেক্ষেত্রে স্ত্রীকে গৃহস্থালির কাজ করতে বলা কখনই অন্যায় নয়। বেঞ্চের মতে, এটা পরিবারের প্রতি স্ত্রীর ভালোবাসা এবং স্নেহ হিসেবে গণ্য করা হয়।
মা-বাবার কাছ থেকে স্বামীকে আলাদা করা নিয়েও স্ত্রীকে ভর্ৎসনা করেছে দিল্লি হাইকোর্ট। বেঞ্চের মতে, বৃদ্ধ পিতামাতার যত্ন নেওয়া ছেলের নৈতিক এবং আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যেখানে বৃদ্ধ পিতামাতার আয়ের কোনও উৎস নেই, সেখানে বিয়ের পর হিন্দু ছেলের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াটা কাম্য সংস্কৃতি নয় বলে মনে করছেন বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।উচ্চ আদালত আরও জানিয়েছে, বৈবাহিক জীবন রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন আবেদনকারী স্বামী। স্ত্রীর জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনি। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে থাকতে রাজি হননি মহিলা। নানা অজুহাত দেখিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয় বলেও জানিয়ে দেয় উচ্চ আদালত।
প্রকৃত ঘটনাটি কী
সম্প্রতি দিল্লির বাসিন্দা এক মহিলা স্বামীর বিরুদ্ধে পারিবারিক আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন। তাতে অভিযোগ করেছিলেন, স্বামী তাঁকে গৃহস্থালির কাজকর্ম করতে বাধ্য করছেন এবং মা-বাবার সঙ্গে বসবাস করছেন। এটা তাঁর প্রতি নিষ্ঠুরতা বলে মনে করছেন স্ত্রী। সেই সঙ্গে করেছিলেন বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন। এরপরেই স্ত্রীর আবেদন খারিজ করার জন্য দিল্লি হাইকোর্টে মামলা ঠুকেছিলেন স্বামী।
পূ্র্বের মামলা
স্ত্রী শিক্ষিত হলে, তাঁকে চাকরি করতে বাধ্য করানো যাবেনা বলে গত বছর অক্টোবর মাসে একটি চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। একটি বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় দিল্লির পারিবারিক আদালত স্ত্রী-কে মাসে ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছিল। ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কমানোর জন্য দিল্লি হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বামী।
তাঁর যুক্তি ছিল, স্ত্রীর বিজ্ঞানের স্নাতক। তাই চাকরি পাওয়ার যোগ্য। মামলায় পর্যবেক্ষণে বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছিল, স্ত্রী স্নাতক হলেও লাভজনক চাকরি পাননি। ডিগ্রি আছে বলে স্ত্রীকে চাকরি করতে বাধ্য করা যায়না বলে জানিয়েছিল বেঞ্চ।