অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে সরাসরি নিশানা করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 'বিজেপি বাবু' বলে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন মমতা। নারী দিবস উপলক্ষে মিছিল শেষে আয়োজিত সভায় যোগ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। বিচারের চেয়ারে বসে, বিজেপি বাবু...বিজেপি পার্টিতে জয়েন করার কথা ঘোষণা করছেন। বিজেপি বললেই বিচার... বিজেপি যা বলছে তাই হচ্ছে। আমি জাজ নিয়ে বলতে পারি না, কিন্তু জাজমেন্ট নিয়ে বলতে পারি। কারণ আমিও একজন আইনজীবী, এখন নয়, অতীতে। আইনে কোনটা সঠিক, কোনটি বেঠিক, সেটা আমরাও জানি।'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, 'আমি খুশি যে মুখোশটা বেরিয়ে গিয়েছে। মুখোশটা খুলে পড়েছে। মুখ এবং মুখোশ। আমরা প্রথম থেকে বলছিলাম, হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর চাকরি খেয়ে, বড় নেতা হয়ে গিয়েছিলেন, প্রতিদিন মিটিং করে বক্তৃতা দিচ্ছেন, টিভিতে গিয়ে ইন্টারভিউ করছেন। অভিষেককে তো নাম করে করে রোজ গালাগালি দিত, অনেক কিছু দেখেছি, আজ আপনি কোথায় গেলেন? কাল থেকে আপনার রায় তো জনগণ দেবে। আপনি হাজার হাজার ছেলেমেয়েদের চাকরি খেয়েছেন, তৈরি থাকুন, আপনি যেখানে দাঁড়বেন আমি পড়ুয়াদেরই নিয়ে যাব, কারণ পড়ুয়ারাই লড়াই করবে, যাঁদের চাকরি আপনারা খেয়েছেন। চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই, আপনারা চাকরি খেয়ে নেন।' যদিও ওয়াকিবহালমহল মনে করছে ছাত্রছাত্রী বলতে হয়ত, আইনের ফাঁসে যে সমস্ত চাকরি প্রার্থীর নিয়োগ আটকে রয়েছে, তাঁদের কথাই বলতে চেয়েছেন মমতা।
আমি খুশি যে মুখোশটা বেরিয়ে গিয়েছে। মুখোশটা খুলে পড়েছে। মুখ এবং মুখোশ। আমরা প্রথম থেকে বলছিলাম, হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর চাকরি খেয়ে, বড় নেতা হয়ে গিয়েছিলেন, প্রতিদিন মিটিং করে বক্তৃতা দিচ্ছেন, টিভিতে গিয়ে ইন্টারভিউ করছেনমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রসঙ্গত, গত রবিবারই বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তারপরেই একে একে বিচারপতির পদে ইস্তফা দেন এবং বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা করে। আর বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগদান করেন অভিজিৎ। এদিন তাঁকে দলে স্বাগত জানান রাজ্য় বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতৃত্ব।
এদিন বিজেপিতে যোগ দিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, তিনি বৃহত্তর ক্ষেত্রে পা রাখতে চলেছেন। এই প্রসঙ্গে এর আগে অভিজিৎ জানিয়েছিলেন, তিনি এবং বিজেপি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আর তারপরেই বিজেপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। যদিও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই বক্তব্যের পরেই আসরে নেমে পড়ে তৃণমূল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেন, বিচারপতির আসনে থেকে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন তিনি। তাঁর বিভিন্ন নির্দেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলেই কার্যত অভিযোগ করা হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে। আর এদিন সরাসরি নাম না করে তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন দলনেত্রী।