দীর্ঘ এক বছর যাবত জমি নিয়ে শরিকি বিবাদ না মেটায় ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের সামনেই কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করলেন এক ব্যক্তি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চোপড়া ব্লকের মৌলালি এলাকার বাসিন্দা নুরুল হক এবং তাঁর ভাই মহম্মদ আইয়ুবের মধ্যে এক বিঘা জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল। জমি সংক্রান্ত সেই বিবাদ মিমাংসার জন্য চোপড়া ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের শরণাপন্ন হলেও এখনও পর্যন্ত তা সমাধান হয়নি। ভূমি সংস্কার দফতরে দালালদের হাতে এই জন্য বেশ কিছু টাকা দিতে হয়েছে বলেও অভিযোগ।দীর্ঘদিন ধরে দুই ভাই মধ্যে জমির বিবাদ না মেটায় বৃহস্পতিবার সকালে নুরুল হক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সামনে এসে কীটনাশক ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পেয়ে তাঁকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালেই নুরুল হকের মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন মৃত ব্যক্তির ছেলে শাহাবুদ্দিন।
মহম্মদ নজরুল ইসলাম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, 'আমরা দোকানে চা খাচ্ছিলাম। একজন বলল একটা লোক বিপদে পড়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম কিছু খেয়েছেন? বললেন খেয়েছি। তারপর একটা টোটো আসছিল, তারপর সেই টোটোয় করে তুলে নিয়ে গেলাম। পুরো শরীর ছেড়ে দিয়েছিল। ওঁর ছেলেকে আমি চিনি, ফোন করে দিয়েছিলাম। শুনলাম পরিবারিক কিছু সমস্যা ছিল।'
এই বিষয়ে মৃতের ছেলে সাহাবুদ্দিন বলেন, 'এক বছর ধরে অফিসে ঘুরছেন। আজ বিএলআরও অফিসের সামনে বিষ খেয়েছেন। টাকা দেওয়া হয়েছিল। দালাল টাকা চেয়েছিল। কাকা নিজের নামে সমস্ত জমি নিয়ে নিয়েছিল। সঠিক বিচার চাই।' জাহাঙ্গির আলম নামে এক প্রতিবেশী বলেন, 'শুনলাম অফিসের সামনে এসেছিলেন, অফিসের সামনেই বিষ খেয়েছেন। জায়গা নিয়ে কোনও সমস্যা ছিল বলে শুনেছি। তবে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা না বললে বুঝতে পারব না। জমি সংক্রান্ত সমস্যাও হতে পারে, অভাব অনটনের বিষয়ও হতে পারে।'
এদিকে এই বিষয়ে চোপড়া ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক সুবিমল চক্রবর্তী টেলিফোনে জানিয়েছেন, 'নির্বাচনী প্রশিক্ষণে যাওয়ার কারণে আজ তিনি অফিসে যেতে পারেননি। তবে ঘটনার খবর পেয়েছি। কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।'