• পথ কুকুরের চেয়ে মানুষের জীবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ, পর্যবেক্ষণ কেরালা হাইকোর্টের
    এই সময় | ০৮ মার্চ ২০২৪
  • যেভাবে পথ কুকুরের হামলার সংখ্যা বেড়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল কেরালা হাইকোর্ট। পথ কুকুরের থেকে মানুষের জীবনকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে বলে পর্যবেক্ষণে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে পথ কুকুর পালনে যাঁরা আগ্রহী, স্থানীয় প্রশাসনের তরফে তাঁদের লাইসেন্স প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।প্রকৃত ঘটনাটি কী?

    সম্প্রতি কেরালার কান্নুরের মুজথাদান ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজীব কৃষ্ণান নামে এক ব্যক্তি একটি জখম পথ কুকুরকে বাড়িতে এনে লালনপালন করেছিলেন। অভিযোগ, আরও বেশ কয়েকটি পথ কুকুরের উপস্থিতির কারণে কৃষ্ণানের বাড়ি ও তার আশপাশ অঞ্চল দিয়ে যাওয়া আসা করতে সমস্যায় মধ্যে পড়তে হয় অন্যান্য বাসিন্দাদের।

    পথ কুকুরের দ্বারা স্থানীয় বেশ কয়েকজন হামলার শিকারও হয়েছিলেন। এরপর স্থানীয় দুই বাসিন্দা কৃষ্ণানের বিরুদ্ধে কেরালা হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন। বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানি। মামলার পর্যবেক্ষণে পথ কুকুরের চেয়ে মানুষকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়ার উপর জোর দিয়েছে কেরালা হাইকোর্ট।

    পর্যবেক্ষণে কী বলেছে হাইকোর্ট?

    কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণানের বেঞ্চে ছিল মামলার শুনানি। দুই পক্ষের সওয়াল জবাবের পর বিচাপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, ‘কুকুরের আক্রমণের ভয়ে পড়ুয়ারা একা স্কুলে যেতে পারছে না। বাসিন্দা নির্দিষ্ট এলাকা দিয়ে হাঁটা এড়িয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসন কুকুরগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেল, কুকুরপ্রেমীদের জন্য ব্যবস্থা নিতে পারছে না।’

    এটা সমাজের কাছে হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন কুনহিকৃষ্ণান। এরপরেই পথ কুকুরের চেয়ে মানুষের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে দিয়েছেন নির্দেশ।

    কুকুরপ্রেমীদের উদ্দেশ্যে কী বার্তা?

    বিচারপতি কুনহিকৃষ্ণান তাঁর পর্যবেক্ষণে আরও জানিয়েছেন যে যাঁরা পথ কুকুরকে দেখভাল করতে প্রস্তুত, তাঁদের স্থানীয় প্রশাসনের তরফে যাতে লাইসেন্স প্রদান করা হয়। এই লাইসেন্স ইস্যু করার সময় ২০২৩ সালে পথ কুকুরদের নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আইন মেনে চলার উপরও জোর দিয়েছেন তিনি।

    এরই পাশাপাশি রাজীব কৃষ্ণানকে আগামী এক মাসের মধ্যে লাইসেন্সের জন্য আবেদনের নির্দেশ দিয়েছেন। লাইসেন্সের জন্য আবেদন না করলে, পথ কুকুরকে এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রশাসন পদক্ষেপ নিতে পারবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।

    প্রসঙ্গত, সরকারি রিপোর্ট অনুসারে ২০১৯ সালে কেরালায় সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি পথ কুকুরের হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ২০২০ সালে হামলার সংখ্যা ছিল ৩,৯৫১। ২০২১ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছিল ৭ হাজার ৯২৭। ২০২২ সালে পথ কুকুরের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছিলেন ১১ হাজার ৭৭৬ জন। ২০২৩ সালে ৬,২৭৬টি হামলার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছিল।
  • Link to this news (এই সময়)