Calcutta High Court: সিবিআই না পুলিশ, কে দেবে সাক্ষীদের নিরাপত্তা, প্রশ্ন কোর্টের
এই সময় | ০৮ মার্চ ২০২৪
এই সময়: সন্দেশখালিতে ইডি অফিসারদের উপর হামলার ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সূত্রে সন্দেশখালির বাসিন্দা পুরুষ-মহিলাদের সাক্ষ্য নিতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের। কিন্তু তাঁদের নিরাপত্তা কে দেবে? বৃহস্পতিবার সন্দেশখালি সংক্রান্ত স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় এই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন আদালতের বক্তব্য, ‘রাজ্য পুলিশে আস্থা নেই সন্দেশখালির মহিলাদের। তাহলে তাঁদের নিরাপত্তা কে দেবে?’যেহেতু তদন্ত এখন সিবিআই করছে এবং সিবিআইকেই সেখানকার মহিলাদের সাক্ষ্য নিতে হবে, তাই তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্ব তারা নেবে কি না, তা আগামী শুনানিতে জানাতে হবে সিবিআই ও কলকাতা পুলিশ দু’পক্ষকে। পাশাপাশি শেখ শাহজাহানতে তৃণমূল নেতৃত্ব সাসপেন্ড করলেও এখনও কেন তাঁকে জেলা পরিষদের পদ থেকে সরানো হয়নি, তাও জানতে চায় বেঞ্চ। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব শাহজাহানকে ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করার দিনই জানিয়েছিলেন, জেলা পরিষদের পদ থেকে তাঁকে সরানোর নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিন আইনজীবীদের একাংশ প্রশ্ন তোলেন, হাইকোর্টের লাগাতার চাপে শেষ পর্যন্ত শাহজাহানের গ্রেপ্তারির পরে কি আদালত বিষয়টি হালকা ভাবে নিচ্ছে? প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, আদালত চায়, ঘটনার গভীরে গিয়ে বিচার করতে। মামলাকারী-আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, ‘বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সভায় গিয়েছিলেন সন্দেশখালির কয়েকজন মহিলা। তাঁরা মামলায় যুক্ত হতে চান।’
প্রধান বিচারপতি তাঁকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের হলফনামা দিয়ে জানান। তাঁরা কী চান, তা লিখিতভাবে জানান। তাঁদের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে বলবেন। নাহলে রাজ্য বলতে পারে, তাঁরা সেখানকার বাসিন্দা নন।’ এদিন আদালত-বান্ধব জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় একটি রিপোর্ট জমা দেন আদালতকে। তিনি আদালতে জানান, মহিলারা তাঁদের অসম্মানের কথা জানিয়েছেন। অনেকে জমি হারিয়েছেন। সেখানকার মানুষের জমি দখল করেছে শাহজাহানের বাহিনী।
ইডির কৌঁসুলি জানান, রাজ্যকে অনুরোধ করা হচ্ছে বাকি এফআইআর তাদের হস্তান্তর করা হোক। মামলায় যুক্ত হওয়া অন্য এক আইনজীবীর বক্তব্য, ‘শাহজাহান গ্রেপ্তার হলেও, ঔরঙ্গজেবরা বাইরে ঘুরছে। তাই সেখানকার মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া হোক।’ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এখন সন্দেশখালিতে কেউ না গেলেই ভালো হবে।’
এজিও তাতে সহমত পোষণ করেন। টিব্রেওয়াল বলেন, ‘সেখানকার মহিলারা আমাদের জানিয়েছেন, বাইরে থেকে লোকেরা গেলে তাঁরা সাহস পাচ্ছেন কথা বলতে।’ তাতে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘অন্তত চার বছর পর বেলুন ফেটে গিয়েছে।’ শেখ শাহজাহানকে জেলা পরিষদের পদ থেকে না সরানো নিয়ে প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে এজি বলেন, সেটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই করা হবে। যদিও শাহজাহানের আইনজীবী বলেন, ‘আমার মক্কেল এখন অন্ধকারের পোস্টার বয়। কাস্টডি ট্রায়ালের প্রয়োজন নেই। তিনি জেলা পরিষদের বৈঠকেও যাননি। কাউকে হুমকিও দেননি।’
এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে অন্য একটি মামলায় সন্দেশখালির তিন খুনের ঘটনায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে দায়ের মামলায় রাজ্য পাল্টা হলফনামা দেওয়ার জন্য সময় চায়। ১৯ মার্চ পরবর্তী শুনানি। আদালতের নির্দেশ, এই মামলায় নিম্ন আদালতের সমস্ত বিচারপ্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখা হবে।