• নাটকের কর্মশালায় সামিল ওঁরাও, দৃষ্টিহীনদের জন্য অভিনব উদ্যোগ উলুবেড়িয়ায়
    এই সময় | ০৯ মার্চ ২০২৪
  • ‘অন্ধজনে দেহ আলো!’ কবির কথায়, দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলা মানুষদের সমাজের মূল স্রোতে সামিল করানোটা আমাদের কর্তব্য। সেই কর্তব্য দীর্ঘদিন ধরে পালন করে আসছে, উলুবেড়িয়ার আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুল। এবার বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য বিশেষ নাটকের কর্মশালার আয়োজন করলেন তাঁরা।কথায় আছে ইচ্ছে শক্তি আর মনের জোরে অনেক অসম্ভবকেই সম্ভব করা যায়। আর সেটাই করে দেখাচ্ছে উলুবেড়িয়ার আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলের দৃষ্টিহীন ছাত্রীরা। পড়াশোনা, খেলাধূলার পাশাপাশি নিজেদের স্কুলের বাগানে সবজি চাষ। এতদিন সবকিছুই সাবলীল ভাবে করছিল স্কুলের দৃষ্টিহীন ছাত্রীরা। আর এবার তাদের সেই চেনা গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে এইসব দৃষ্টিহীন ছাত্রীদের অভিনয় শেখানোর উদ্যেগ নিল শ্যামবাজারের অন্যদেশ নামে একটি নাট্য সংস্থা।

    কথায় আছে থিয়েটার একটি চশমা। নাটকের এই চশমা দিয়ে একজন দৃষ্টিহীন অনেক দূর পর্যন্ত দেখতে পারে। নিজেদের জড়তা কাটিয়ে তারা সমাজে এগিয়ে চলার প্রেরনা পায়। নতুন দিশা খুঁজে পেয়ে দৃষ্টিহীন মহিলারা আত্মনির্ভর হয়ে ওঠে। সেইমত গত তিনমাস ধরে উলুবেড়িয়ার আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলের দৃষ্টিহীন ছাত্রীদের জন্য নাটকের কর্মশালার আয়োজন করা হল।

    শুক্রবার ছিল এই কর্মশালার শেষ দিন। আর কর্মশালার শেষদিনেই স্কুলের অডিটরিয়ামে সকলের সামনে স্কুলের দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা সাবলীলভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পোস্টমাস্টার’ নাটকটি সাবলীল ভাবে মঞ্চস্থ করে। এদিনের এই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধা শিক্ষক অজয় দাস।

    স্কুলের দৃষ্টিহীন ছাত্রীদের এই নাটকের কর্মশালা প্রসঙ্গে অজয় দাস জানান, নাটক দৃষ্টিহীন শিশুদের মদে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে। সেই কারণে স্কুলে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, চিরাচরিত পড়াশোনার আঙিনা থেকে বেরিয়ে নতুন একটা জগতে প্রবেশ করে খুশি দৃষ্টিহীন ছাত্র-ছাত্রীরা। এই প্রথম নাটকে অভিনয়। তাও আবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পোস্টমাস্টার’ গল্পে। অভিনয় করে খুশী জবা সরকার ও সুমিত্রা কিস্কুরাও। তাঁদের বক্তব্য, ‘ভবিষতে সূযোগ পেলে আবার নাটকে অভিনয় করবেন।’ পাশাপাশি স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও নাটক করার ইচ্ছা প্রকাশ করে জবা ও সুমিত্রা। প্রসঙ্গত, আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুল ছাড়াও কলকাতার ব্লাইন্ড স্কুলে এবং শিলিগুড়ি ব্লাইন্ড স্কুলেও এই ধরনের নাটকের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল।
  • Link to this news (এই সময়)