আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য আসানসোল কেন্দ্রে বিজেপির পক্ষ থেকে প্রার্থী হিসেবে ভোজপুরি গায়ক নায়ক পবন সিংয়ের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে প্রার্থী পদ থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন তিনি। এরপর আসানসোলে বিজেপির প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে নানামহলে বিভিন্ন জল্পনা চলছে।এই আবহে আসানসোলের এক সাংবাদিক বৈঠকের আহ্বান জানায় গেরুয়া শিবির। সেই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়, বিজেপি ওবিসি মোর্চা জাতীয় কমিটির সদস্য শংকর চৌধুরী, রাজ্য কমিটির সদস্য বিবেকানন্দ ভট্টাচার্য, জেলা কমিটির সদস্য স্বপন রায়কে। শংকর চৌধুরী বলেন, '২০১১ সালে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার গঠিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন মনে হয়েছিল একজন মহিলা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, তাই এখানে অন্তত মহিলারা নিরাপদ থাকবেন। কিন্তু এখানে যেভাবে সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটছে তাতে মানুষের সেই বিশ্বাস ভেঙ্গে গিয়েছে। এছাড়াও গোটা বাংলায় সব ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে দুর্নীতি হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে গোটা পশ্চিমবঙ্গ দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সেই কারণে বিজেপির তরফে একটানা আন্দোলনও চালানো হচ্ছে।'
শংকর চৌধুরী আরও বলেন, 'আসানসোল কেন্দ্রে ২০১৪ ও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী বিশাল জয় পেয়েছিলেন। এটা অর্জন করা সম্ভব হয়েছিল কারণ, এখানকার বিজেপি নেতা ও কর্মীরা বিজেপি প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে সর্বস্ব উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়। এমনকী তাঁদের জেলেও পাঠান হয়। তাঁদের উপর অত্যাচার করা হয় ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিজেপি নিবেদিত প্রাণ কর্মীরা মাঠ ছাড়েননি। এই আসনটি পরপর দু'বার জিতে নরেন্দ্র মোদীকে উপহার দিয়েছিলেন বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। এবার দেখা গেল আসানসোল কেন্দ্রের জন্য ভোজপুরি গায়ক নায়ক পবন সিংয়ের নাম ঘোষণা করা হল দিল্লি থেকে। কিন্তু পরে দেখা গেল পবন সিং ব্যক্তিগত কারণে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে লড়াই করা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিলেন। এবার আমাদের ইচ্ছ হাইকমান্ড এবার আসানসোলে স্থানীয় কাউকে টিকিট দেবে।'
আসানসোলে স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করলে বেশি সুবিধা হবে বিজেপির?হ্যাঁনাজানি না
এই বিজেপি নেতা বলেন, 'অনেকেই বিজেপিতে আসেন। দল বাবুল সুপ্রিয় বা পবন সিংয়ের মতো সেলিব্রিটিদের প্রার্থী করে। তাঁরা নির্বাচনে জয়লাভ করেন, তারপরে তাঁরা হয় অন্য দলে চলে যান বা দলের জন্য যে কাজ করা উচিত তা করেন না। তাই বিজেপি কর্মীদের আশা, এবার আসানসোলের কেউ আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ৩০/৪০ বছর বয়সী দলের কর্মীদের টিকিট দেওয়া উচিত, যাঁরা হৃদয়ে পদ্ম ফুল নিয়ে বিজেপির হয়ে কাজ করে চলেছেন।'
তবে স্থানীয় প্রার্থীর দাবি তুললেও শংকর পাশাপাশি এও বলেন, দলীয় নেতৃত্ব যদি আসানসোলের বাইরে থেকে কাউকে লোকসভার টিকিট দেন, তাহলেও আসানসোলের প্রতিটি বিজেপি কর্মী তাঁকে জয়ী করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবেন। তবুও আসানসোলের বিজেপি কর্মীরা শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অনুরোধ রাখছেন, যাতে এখানকার মাটির ছেলেকে লোকসভার টিকিট দেওয়ার হয়।'