আমেঠী, না ওয়েনাড? লোকসভা নির্বাচনে কোন আসন থেকে লড়বেন রাহুল গান্ধী? গত কয়েকদিন জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল জাতীয় রাজনীতিতে। আপাতত সমস্ত জল্পনার অবসান হল কংগ্রেসের প্রকাশিত প্রথম প্রার্থী তালিকায় ওয়েনাড থেকে প্রার্থী হিসেবে রাহুলের নাম ঘোষণার পর। উত্তরভারত নয়, দক্ষিণকে কংগ্রেস পাখির চোখ করছে বলে তৈরি হয়েছে ধারণা।কেন ওয়েনাড থেকে প্রার্থী রাহুল
বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক দল সিপিআইএম ইতিমধ্যে ওয়েনাডে প্রার্থীপদ ঘোষণা করে দিয়েছে। কংগ্রেস রাহুলকে প্রার্থী করাই, জোটের দুই শরিকের মধ্যে লড়াইয়ের সম্ভাবনা প্রবল। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ জোট ৪০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।
এজন্য এনডিএ জোটের বড় শরিক বিজেপি উত্তরভারতের রাজ্যগুলির পাশাপাশি কেরালা, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলিতে পা রাখার চেষ্টা করছে। ওয়েনাডে প্রার্থী করে দক্ষিণে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাহুলকে সেনাপতি হিসেবে এগিয়ে দিতে চাইছে দল। এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলে।
গত বছর প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির ভারত জোড়ো যাত্রার সময় দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে ব্যাপক সাড়া পেয়েছিল কংগ্রেস। তার প্রভাবও পড়েছিল কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে। দক্ষিণে রাহুলকে প্রার্থী করার পিছনে সেটাও একটা প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া, ওয়েনাড রাহুল গান্ধীর নিরাপদ আসন বলে মনে করছে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
একাধিক নেতা ও কর্মী দল ছাড়ায় উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি তলানিতে এসে ঠেকেছে। এখনও পর্যন্ত সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের আসনরফা চূড়ান্ত হয়নি। আদৌও হবে কীনা, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। এমন অবস্থায় রাহুলকে আমেঠীতে দাঁড় করালে, জয় নিয়ে সন্দিহান ছিল শীর্ষ নেতৃত্ব।
আমেঠীতে রাহুলকে প্রার্থী করার জন্য পোস্টার
ওয়েনাড থেকে প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পর, রাহুল আমেঠী কেন্দ্র থেকে আদৌও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কীনা, তা এখনও পর্যন্ত দলের তরফে স্পষ্ট করা হয়নি। তবে, এখনই হাল ছাড়াতে নারাজ আমেঠীর কংগ্রেস নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে প্রার্থী হিসেবে প্রাক্তন সভাপতিকে চেয়ে একাধিক জায়গায় পড়েছে পোস্টার। রাহুলের জন্য আমেঠীর কংগ্রেসকর্মীরা রক্ত দেবে বলে আবেগঘন পোস্টার সাঁটানো হয়েছে।
আমেঠীর জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি শুভম সিং জানিয়েছেন, ইডি ও সিবিআইকে লেলিয়ে রাহুলকে হেনস্থা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এর জবাব দিতে প্রস্তুত কংগ্রেস কর্মীরা। এজন্য রাহুল গান্ধীকে যাতে আমেঠী থেকে প্রার্থী করা হয়, তারজন্য শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জানিয়েছেন আবেদন। জবাব না দেওয়া পর্যন্ত কংগ্রেস কর্মীরা লড়াই চালিয়ে যাবে বলে দিয়েছেন বার্তা।
তবে, নতুন করে অঘটন না ঘটলে, রাহুলের আমেঠীর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা এই মুহুর্তে নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।