Mir Osman Ali Khan: সম্পত্তিতে বসে খেয়েছে কয়েক প্রজন্ম! চিনে নিন ভারতের সবচেয়ে ধনী কৃপণ নবাবকে
এই সময় | ০৯ মার্চ ২০২৪
সম্পদ জমানো ভালো অভ্যাস। জ্ঞানী-গুণী ব্য়ক্তি সকলেই এক বাক্যে মানেন মাসে '১০০টাকা আয় করলে অনন্ত ২০টাকা সঞ্চয় করা উচিত' এই চিরাচরিত উপদেশ। সঞ্চয়ই কাজে আসে সময়-অসময়ে। তবে হ্যাঁ, এক্ষেত্রে অবশ্য আর একটা কথাও প্রযোজ্য। তা হল আয়ের একটা মোটা অংশ কিন্তু ভোগ করতেও হবে। সম্পদের বেশিরভাগটাই যদি আবার সঞ্চয়ের খাতে চলে যায়, ভোগই যদি না করা হয় তবে তো জীবনই বৃথা! যাইহোক সেসব বিতর্ক তোলা থাক। এই প্রতিবেদনে এমন একজনের কথা জানা যাবে যাঁর সম্পত্তির পরিমাণ পাহাড় প্রমাণ বললেও ভুল হবে। বিপুল সম্পদের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও নিজে ভোগ করতেন না। উদারহস্ত হলেও কৃপণ হিসেবে নাম কুড়িয়েছিলেন।কথা হচ্ছে মীর ওসমান আলি খানকে নিয়ে। একসময় তাঁকেই পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি হিসেবে ধরা হতো। শোনা যায় তিনি নাকি যে পেপারওয়েট ব্যবহার করতেন তা ১ হাজার কোটির হীরের। তাঁর মৃত্য়ুর পর পাঁচ দশকের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। ১৯৩৭ সালেই তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল আনুমানিক দুই বিলিয়ন ডলার — বর্তমানের হিসেবে যা প্রায় ৩৮ বিলিয়ন ডলারের সমান।
উসমান আলি খান বিখ্যাত ছিলেন তাঁর উদ্ভট স্বভাবের জন্য। বিভিন্ন মূল্যবান রত্নের পেছনে লাখ লাখ অর্থব্যয় করতে কুণ্ঠাবোধ করতেন না নবাব। অথচ দীর্ঘ ব্যবহারে কম্বল জীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও সামান্য টাকা খরচ করে নতুন কম্বল কেনেননি। শোনা যায়, নিজাম সাহেব সেলাইকরা জামাকাপড় মাসের পর মাস পরতেন। শোনা যায়, তাঁর প্রাসাদে আসা অতিথিদের সিগারেট ঝেড়ে দিতেন। এমন কী সিগারেটের ফেলে দেওয়া অংশও তুলে রাখতেন সুখটান দেওয়ার জন্য়। হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে বা কেউ চুরি করে নেবে এই আশঙ্কায় নিজের রত্নভাণ্ডার পাতালঘরে লুকিয়ে রাখতেন উসমান আলি। একবার এক ট্রাঙ্ক ভর্তি সোনা দান করেছিলেন ভারতের ন্যাশনাল ডিফেন্স ফান্ডে। তিনি পইপই করে বলে দিয়েছিলেন, ফেরত দিতে হবে তাঁকে ওই ট্রাঙ্কটি। নবাবের গ্যারেজে একের পর এক গাড়ির লাইন। রোলস রয়েস গাড়ির ছড়াছড়ি। অন্তত ৫০টি রোলস রয়েসের কথা জানা যায়। অথচ এতগুলি গাড়ি থাকা সত্ত্বেও তিনি নাকি ১৯১৮ সালের মডেলের ভাঙাচোরা একটি গাড়ি নিয়ে পথে বেরোতেন। যে ব্যক্তি ৫,০০০ কেজি সোনা দান করতে পারেন, তাঁর জীবনযাপন কতটা রাজকীয় হওয়া উচিত। কিন্তু হায়দরাবাদের নিজাম ছিলেন সম্পূর্ণ উলটো, তিনি চাটাইয়ে বসে টিনের থালায় খাবার খেতেন। ১৯৬৭ সালে ৮০ বছর বয়সে মৃত্যু হয় ওসমানের। কিন্তু তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া মিথগুলো এখনও অমলিন।
ওসমান আলি খানের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২৩৬ বিলিয়ন ডলার। কৃপণ নাম কুড়ানো এই নবাব হায়দরাবাদ শাসন করেছিলেন ১৯১১ সাল থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ৩৭ বছর ধরে, দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় যারা ভারতের অংশ হতে চাননি, তাঁদের অন্যতম ছিলেন ওসমান।