গত রবিবার গভীর রাতে ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালের কোয়ার্টারে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় চিকিৎসক কল্যাণাশিস ঘোষের। মৃত চিকিৎসক হুগলির কোন্নগরের নবগ্রামের বাসিন্দা। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী ও নাবালিকা কন্যা। ঘটনার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন মৃতের পরিবারের সকলে। দোষীদের শাস্তি চাইছেন মৃত চিকিৎসকের স্ত্রী অনামিকা ঘোষ।ঘটনা সম্পর্কে তার স্ত্রী অনামিকা জানান, তাঁর স্বামী একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক ছিলেন। কোভিডের সময় কাজ করার জন্য রাজ্য সরকার থেকে অনেক পুরস্কারও পেয়েছেন। ঘটনার দিন চিকিৎসকের মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল। ঘটনার রাতে ফোনে কথাও হয়েছিল পরিবারের লোকেদের সঙ্গে। তারপরেই কল্যাণাশিস ঘোষের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর আসে।
মৃত চিকিৎসকরে স্ত্রী অনামিকার জোরাল দাবি, তাঁর স্বামীকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। অভিযুক্ত মহিলা রিয়া দাসের ডায়মন্ডহারবারে একটি শাড়ির শোরুম রয়েছে। মহিলা একাধিক পুরুষের সঙ্গে এই ধরনের চক্রান্ত করেন। তাঁর স্বামীকেও সেই চক্রান্তের শিকার করেছিলেন তাঁরা। মানসিক নির্যাতন করে তাকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করেন। মৃতের স্ত্রী আরও অভিযোগ করে বলেন ওই মহিলা ছলে বলে অছিলায় তাঁর স্বামীকে একবার ডেকে অন্য লোকজন দিয়ে মারধরও করিয়েছিলেন। সেখান থেকে কোনওরকমে পালিয়ে বাঁচেন তাঁর স্বামী। এমনকী কল্যাণীশিসের মৃত্যুর পর তিনি জানতে পারেন যে তাঁর স্বামীর সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট শূন্য হয়ে গিয়েছে।
মৃত চিকিৎসকে স্ত্রী অনামিকা ঘোষ তিনি ও তাঁর নাবালিকা মেয়ে ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত, একইসঙ্গে আতঙ্কিতও। অনামিকার অভিযোগ, ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের কিছু প্রভাবশালী মানুষের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে। আর সেই কারণেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার গভীর রাতে পরিবারের সঙ্গে ফোনে শেষ বারের জন্য যোগাযোগ করেন ওই চিকিৎসক। তিনি মানসিক অবসাদে ছিলেন বলে পরিবার সূত্রে খবর। এরপরেই পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরিবারের কাছ থেকে খবর পেয়েই গভীর রাতে তড়িঘড়ি মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের কোয়ার্টারে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু পুলিশ পৌঁছে দেখে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় রয়েছেন ওই চিকিৎসক। গ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনার জেরে শোকস্তব্ধ মৃত চিকিৎসক কল্যাণাশিস ঘোষের পরিবারের সদস্যরা।