Save Weather : জল অপচয় রুখতে সমীক্ষায় সামিল শহরের স্কুল-পড়ুয়ারা
এই সময় | ১০ মার্চ ২০২৪
এই সময়: গানের কথায় ছিল, ‘আমার শহরে শুকিয়ে যাচ্ছে জল, অন্য কোথাও চল...!’ সেই গান আজ বড় বাস্তব। জলের অভাব খুঁজতে আর বেশি দূর যেতে হবে না। যেতে হবে না কোনও শুষ্ক মরু-প্রান্তরে। বেঙ্গালুরুতে শুকিয়ে যাচ্ছে একের পর এক লেক, জলাশয়। খাবার জল, ব্যবহারের জলের হাহাকারে ভুগছেন মানুষ।সেই বেঙ্গালুরুর ঘটনা মনে রেখে শহরের একাধিক স্কুল উদ্যোগী হলো জল-সমীক্ষায়। ছাত্রছাত্রীরাই সমীক্ষক। জলের অপচয় রোধের পাশাপাশি তাদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে বাড়িতে দৈনিক তার নিজের কত জল খরচ হয়, তার আনুমানিক হিসেব কষার।
এই জল সার্ভের কাজে এগিয়ে এসেছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠ, বেহালার বরিষা বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুল-সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদ নামে একটি সংস্থা সাহায্য করছে স্কুলগুলিকে। স্কুলের পড়ুয়াদের জল সংরক্ষণের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। জ়ুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী অমলেশ মিশ্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন পড়ুয়াদের।
তিনি জানান, প্রথম পর্যায়ে ছাত্রছাত্রীদের বলা হয়েছে বাড়িতে তারা সারাদিনে নিজেরা কত জল খরচ করে, সেই হিসেব তৈরি করতে। পাশাপাশি, কার বাড়ির ছাদে বৃষ্টির জল ধরে রাখার মতো কত জায়গা আছে, তার হিসেবও নেওয়া হবে। জল খরচ কী ভাবে কমানো যায়--পরবর্তীতে সেই পাঠও দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। এই কাজে সহযোগিতা করছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রোও।
যাদবপুরের বিদ্যাপীঠের সপ্তম শ্রেণির দুই পড়ুয়া অনল মাহাত, সৃঞ্জিনী দাশগুপ্তরা ইতিমধ্যে এই সার্ভের কাজ সেরে ফেলেছে। অনলের দাবি, তার দৈনিক ৪২ লিটার জল খরচ হয়। আর সৃঞ্জিনী হিসেব কষে দেখেছে, সে ৬২ লিটার জল খরচ করে। অনলের কথায়, ‘আমি এই জল ব্যবহার ক্রমশ কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। অনেক সময়েই আমরা কল খুলে মুখ ধুই, দাঁত মাজি—এই ভাবে দিনে অনেকটা জল অপচয় করে ফেলি। সেটা এ বার কমিয়ে ফেলার শপথ নিয়েছি।’
আর সৃঞ্জিনী বলছে, ‘বাড়ির অন্যদেরও এই হিসেব দেখিয়ে বলছি, বেঙ্গালুরুতে আজ যা হচ্ছে, তা যদি ঠেকাতে চাও, তা হলে জল অপচয় কমাতেই হবে।’ হঠাৎ কেন এই উদ্যোগ? বরিষা বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষিকা সংযুক্তা বিশ্বাসের কথায়, ‘এর আগেও আমরা ছাত্রীদের দিয়ে এলাকায় ক’টি কল আছে, কতগুলি কল থেকে জল পড়ে নষ্ট হচ্ছে--তার সমীক্ষা করিয়েছি। স্থানীয় কাউন্সিলারকে সেই তথ্য দিয়েছি যাতে জল অপচয় বন্ধ করা যায়।’
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্যর কথায়, ‘স্কুলের মর্নিং অ্যাসেম্বলিতে পড়ুয়াদের এ ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মনিটরদের বলা হয়েছে শৌচালয়গুলিতে কেউ কল খুলে রাখছে কিনা, কোনও লিকেজ আছে কিনা--তা খতিয়ে দেখে আমাদের রিপোর্ট করতে।’