WB Agriculture Department : উন্নত চাষাবাদে কৃষকদের আর্থিক ভর্তুকি সরকারের
এই সময় | ১০ মার্চ ২০২৪
এই সময়: ভাঙড়ের আনাজ পাড়ি দিচ্ছে সেই সিঙ্গাপুর। নেহাতই পটল, ঝিঙে, কুমড়ো নয়। তালিকায় থাকছে জ়ুকিনি বা বকচোইয়ের মতো আনাজপাতিও। আবার, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সুপার স্টোরের তাকে সাজানো থাকছে নদিয়ার খেতের ভেজিটেবলস। অর্গ্যানিক পদ্ধতির পাশাপাশি এ ধরনের চাষের জন্য প্রয়োজন বিশেষ উন্নত প্রযুক্তিরও।যার জন্য দরকার আধুনিক যন্ত্রপাতি। এবং এ সবই যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ। সে ক্ষেত্রে চাষি ও কৃষক সংগঠনগুলির পাশে রয়েছে রাজ্য কৃষি দপ্তর। সাধ্যের মধ্যেই যাতে উন্নত মানের কৃষি সরঞ্জাম ভাড়া নেওয়া যায়, সে ব্যবস্থা করছে দপ্তর। কেউ চাইলে সরঞ্জাম ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করতে পারেন, যা ভাড়া নিয়ে ছোট কৃষকরা লাভবান হতে পারেন। আবার কোনও চাষি বা সংগঠন (ফার্মার্স প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন বা এফপিও) চাইলে এ ধরনের সেন্টার নিজেরাই তৈরি করা যেতে পারে।
দু’ক্ষেত্রেই সরকার ৪০-৮০ শতাংশ ভর্তুকি দেবে। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, আগামী দু’বছরে রাজ্যে ৫০০টি কাস্টম হায়ারিং সেন্টার এবং ১৫০০টি ফার্ম মেশিনারি হাব তৈরি করবে তারা। এ জন্য ৪৫০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। প্রযুক্তির ব্যবহারে কৃষিকাজ অনেকটাই সহজ হয়েছে। ড্রোন দিয়ে কীটনাশক ছড়ানো হোক বা যন্ত্র দিয়ে চারা রোপণ থেকে ফসল তোলা, এমনকী ধান-গমের মতো ফসল স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ঝাড়ানোর কাজ — সবই এখন যন্ত্র দিয়ে করা সম্ভব।
তবে এই যন্ত্র কিনতে গেলে যত টাকার প্রয়োজন, অনেক চাষিই তা কিনতে পারেন না। যার জেরে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েন তাঁরা। এই ভাবনা থেকেই ২০১৪ সালে কাস্টম হায়ারিং সেন্টার তৈরি করে রাজ্য কৃষি দপ্তর। এই সেন্টারগুলিতে ট্রাক্টর থেকে শুরু করে পাওয়ার টিলার, সোলার পাম্প, মিনি ডাল মিল, তেল মিল, বীজ ড্রিল, থ্রেশার, স্প্রেয়ার, কম্বাইন হারভেস্টর, এবং রোটাভেটর থাকে। কৃষকরা সেগুলি ন্যায্য মূল্যে ভাড়া নিতে পারেন।
তাঁরা নিজেদের দল অর্থাৎ এফপিও তৈরি করে এই কৃষি সরঞ্জাম কিনতে পারেন। সে জন্য ৪০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে কৃষি দপ্তর। এ ধরনের একটি সেন্টার তৈরি করতে ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হয়। তার মধ্যে ১৬ লক্ষ টাকা সরকারি ভর্তুকি। আর বাকি অর্থের সংস্থান হয় ব্যাঙ্ক ঋণের মাধ্যমে। এতে প্রযুক্তিগত ভাবে উন্নত হওয়ায় নানা ধরনের এগজ়টিক আনাজের চাষ করতে পারছে এফপিওগুলি। খরচ আর সেখানে বাধা হচ্ছে না।
আবার, কেউ ব্যক্তিগত ভাবে এমন কেন্দ্র তৈরি করলেও এই সুবিধা পাবেন। সেখান থেকেই সরকার-নির্ধারিত মূল্যে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ভাড়ায় নিতে পারবেন ওই ব্যক্তি। পাশাপাশি ছোট এলাকার জন্য তৈরি করা হচ্ছে ফার্ম মেশিনারি হাব। সেখানেও কৃষি সরঞ্জাম ভাড়ায় মিলবে। এ জন্য যে অর্থ খরচ হবে, তা কৃষি দপ্তরের মোট বাজেট বরাদ্দের অর্থ থেকে দেওয়া হবে। ১ এপ্রিল শুরু হবে নতুন এই প্রকল্প। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২২৮টি কাস্টম হায়ারিং সেন্টার করা হয়েছে।