• আলু দেখতে পুতুলের মতো! কিনছেন না ব্যবসায়ীরা, মাথায় হাত হুগলির চাষিদের
    এই সময় | ১০ মার্চ ২০২৪
  • চোখ নাক হাত মুখ সবই আছে, নেই শুধু মাথা, দেখতে অনেকটা পুতুলের মত। আলু খুলতে গিয়ে চক্ষু চরক গাছ তারকেশ্বরের কয়েকশো আলু চাষি। আলুর এরকম চেহারা দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই।হুগলি জেলায় পুরো দমে চলছে জমি থেকে আলু তোলার কাজ। সেখানে তারকেশ্বর ব্লকের আস্তারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় উৎপন্ন আলুর আকৃতি দেখে মাথায় হাত কয়েকশো চাষির। কোনও আলুর আকৃতি পুতুলুলের মত অবার কোনটা হাতি, ঘোড়ার আকৃতির। যার ফলে এই উৎপাদিত আলু কিনতে চাইছেন না কোনও ব্যবসায়ী। অন্যদিকে এই আলু খাওয়ারও অযোগ্য বলে দাবি চাষিদের।

    তাঁদের অভিযোগ, নকল আলুবীজ দেওয়া হয়েছিল। গত বছর নভেম্বর মাসে আস্তারা গ্রামের বাসিন্দা প্রভাস দলুই এর কাছ থেকে SF মার্কা জ্যোতি আলুবীজ কিনে জমিতে চাষ করেছিল চাষিরা। দু’মাস পর আলু খুলতে গিয়ে চাষি দেখতে পান আলু ফাটা, পুতুলের মতো আকৃতি। আর তাতেই মাথায় হাত পড়ে যায় ওই এলাকার কয়েকশো চাষির। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে জানান তারা। ইতিমধ্যেই তারকেশ্বর ব্লক A.D.O অফিস ও স্থানীয় বিধায়কের দ্বারস্থ হয়েছে চাষিরা।

    আলু চাষের শুরুতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে কিছুটা সময় পিছিয়ে গেলেও চাষের মরশুমে তেমন কোনও ক্ষয় ক্ষতি হয়নি আলু চাষে। তারপরও জমিতে যে ফলন হয়েছে তা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে চাষি ও তাঁদের পরিবার। নির্দিষ্ট আলু বীজ ব্যবসায়ী প্রভাস দুলুই এর কাছে যে সমস্ত আলু চাষি বীজ কিনেছিলেন সেই সমস্ত জমিতে আলুর ফলন হয়েছে অত্যান্ত নিম্নমানের। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আলো পরিদর্শন করে যান চাপাডাঙ্গা আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্তারা।

    চাষি অজিত খাঁড়া বিশ্বনাথ দোলুইদের অভিযোগ, দু বিঘা পাচ কাটা মত জমিতে আলু বসিয়েছিলাম। একমাস কুড়ি দিন পর জমিতে গিয়ে আলু খুলে দেখি গোটা জমির আলু ফাটা। গোটা জমির একই অবস্থা। এতে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হবে আমাদের। চাপাডাঙা ব্যবসায়ী সমিতির দেবব্রত দলুই বলেন, ‘কোম্পানিকে আমরা বারবার জানিয়েছি দেখতে আসবারও কথা বলেছি। আমরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছি চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর।’

    তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দ্র সিংহ রায় বলেন, ‘আলুর যে গঠন তা হয়নি। পুতুলের মতো দেখতে হয়েছে। চাষিরা আমার কাছে এসেছিল আমি ইতিমধ্যেই চাপাডাঙা আলু বীজ ব্যবসায়ী সমিতি সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের উপস্থিতিতেই আলু ভাঙা হয়েছে এবং সেটা ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয়েছে। কৃষি দফতরের আধিকারিকরা জমি পরিদর্শন করে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। SF কোম্পানির মালিককে আমাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ব্যবসায় সমিতিকে বলেছি। ক্ষতিপূরণ চাষিদেরকে আমরা করে দেব। যদি কোনওরকম টালবাহানা করে তাহলে আগামী বছর আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও এ বিষয়ে আলু ব্যবসায়ী প্রভাস দুলুই এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার দেখা মেলেনি ফোনেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফোন ধরেননি। তবে তার মা শিখা দেবী দলিল জানান, ছেলে বাড়িতে নেই। পাঞ্জাব থেকে আলু এনে দিয়েছিল চাষিরা নিয়েছিল। ২২ বছর ধরে আলুর ব্যবসা করছে, কোনওদিন এরকম হয়নি। এবার কেন হল সেটা বুঝতে পারছি না।
  • Link to this news (এই সময়)