তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকায় বোধহয় সেরা চমক বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই সপ্তমে চড়লেও বহরমপুর আসনটিকে তৃণমূল কংগ্রেস যে হালকা ভাবে নিচ্ছে না, সেই বার্তাই উঠে এসেছে প্রার্থী তালিকায়। ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম হার্ড হিটার ইউসুফ পাঠানকে এবার রাজনীতির ময়দানে ছক্কা হাঁকাতে তুলে আনলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাও, আবার পাঁচবারের টানা জয়ী সাংসদের বিরুদ্ধে।যদিও, ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘বিজেপির হাত শক্ত’ করার প্রয়াস বলে খোঁচা অধীরের। তিনি বলেন, ‘ইউসুফ পাঠানকে যদি সম্মানিত করতে হতো, তাহলে ওঁকে রাজ্যসভায় সাংসদ করে পাঠাতে পারত। নাহলে গুজরাটের কোনও আসন সেখানকার ইন্ডিয়া জোটের দলের কাছ থেকে নিয়ে সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী করতে পারতেন। কিন্তু ওঁকে এখানে পাঠিয়েছেন বিজেপিকে সাহায্য করতে, যাতে কংগ্রেস হারে।’
তবে, তৃণমূলের এই প্রার্থী ঘোষণায় তৃণমূলে স্ট্র্যাটেজি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অধীর। তাঁর কথায়, তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। সেখানে তিনি নিজেই বহরমপুর আসন থেকে কংরদের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিলেন। তিনি বলেন, ‘এরপর তো ওঁকে আর কোনও রাজনৈতিক দল না নেতা বিশ্বাস করতে পারবে না।’ ইন্ডিয়া জোটের শর্তকে ভেঙে দিয়ে তিনি আদতে বিজেপির সাহায্য করতে চাইছেন বলে আক্রমণ অধীরের।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়া জোটের সমীকরণ মেনে রাজ্যে যে দুটি আসন কংগ্রেসে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস, তার মধ্যে অন্যতম হল বহরমপুর কেন্দ্র। এই আসন থেকেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বরাবর জিতে আসছেন। তবে গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহে সেই চিত্র পাল্টে যায়। রাজ্যের একাধিক ইস্যু নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি লাগাতর রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করায় কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূল এই রাজ্যে লড়বে না, এরকমটাই জানিয়ে দেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বরা।
সেক্ষেত্রে বহরমপুর আসন থেকে ‘রবিনহুড’ অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনও হালকা প্রার্থী বেছে নেওয়া হবে বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। তবে, তৃণমূল কংগ্রেস যে এই আসনটিকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখেছে, সেটাই প্রমাণিত হল প্রার্থী চয়নের পর। তবে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা ও জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘গুজরাট থেকে তুলে এনে বহরমপুরে প্রার্থীব করায় দিদি প্রমাণ করে দিলেন উনি ইন্ডিয়া জোটে নয় বিজেপি জোটে আছেন। তাছাড়া অধীর চৌধুরীকে বহরমপুরের মানুষ গত ২৫ বছর কাছ থেকে দেখেছেন। জননেতা হিসাবে অধীর চৌধুরী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অধীর চৌধুরী মমতা ব্যানার্জীকে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। সেখানে ইউসুফ শিশু।’