• Indonesian Batik Airlines: দেড়শো যাত্রী সঙ্গে! ককপিটেই ঘুমে বেহুঁশ দুই পাইলট
    এই সময় | ১১ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়: চলন্ত বাস কিংবা ট্যাক্সিতে চালকের চোখ লেগে যাওয়ার সাক্ষী মোটামুটি আমরা কম-বেশি সকলেই। কিন্তু মাঝ-আকাশে যদি পাইলট কোনও কারণে ঘুমিয়ে পড়েন? সে ক্ষেত্রে একটাই বাঁচোয়া যে, যাত্রীবাহী বিমানে সাধারণত সহকারী পাইলট থাকেন। ইমার্জেন্সি কিংবা মানবতার খাতিরে তিনি সিচুয়েশনটা ম্যানেজ করে দিতে পারেন। কিন্তু যদি দু’জনেই একসঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন?ভাবতে গিয়ে বুক কাঁপলেও বাস্তবে কিন্তু এমনটাই ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ার বাতিক এয়ারলাইন্সের একটি এয়ারবাসে! মাঝ আকাশে প্রায় আধঘণ্টা অঘোরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন দুই পাইলটই! ১৫৩ জন যাত্রীকে নিয়ে উড়ছিল বিমান। দুই পাইলট বাদে চার জন বিমানকর্মীও ছিলেন ফ্লাইটে। ভাগ্য ভালো যে, অল্প-বিস্তর রুটের গোলমাল করলেও বড় কোনও বিপদ ঘটেনি। যাত্রীরা সকলেই সুরক্ষিত। কিন্তু ঘটনাটা জানার পর থেকে পিছু ছাড়ছে না আতঙ্ক!

    ২৫ জানুয়ারির ঘটনা। প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। মাঝে একটা এয়ারপোর্টে স্টপ দিয়ে শিডিউল মেনেই সাউথ-ওয়েস্ট সুলাওয়েসি থেকে জাকার্তার দিকে যাচ্ছিল বিমানটি। সূত্রের খবর, বিমানটি যখন মাটি থেকে ৩৬ হাজার ফুট উঁচুতে, দুই পাইলটই নিজেদের হেডসেট খুলে ফেলেন এবং ককপিটের লাউডস্পিকারের ভলিউম বাড়িয়ে দেন। তারপর? কোনও পাইলটের সঙ্গেই যোগাযোগ করত না পেরে প্রথম ‘গোলমাল’ টের পায় জাকার্তার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল।

    সূত্রের খবর, একটা সময় দ্বিতীয় পাইলটের কাছে খানিকটা বিশ্রাম নেওয়ার আর্জি জানান পাইলট-ইন-কম্যান্ড। সহকারী আশ্বাস দেওয়ায় ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। প্রায় আধঘণ্টা মতো ঘুমিয়ে চমকে উঠে তিনি দেখেন সহকারীও ঘুমিয়ে পড়েছেন! ততক্ষণে খানিক বিপথে গিয়েছে প্লেন। তড়িঘড়ি ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে কথা বলে নিজস্ব রুটে ফেরেন তাঁরা। যথাসময়ে গন্তব্যেও নামে বিমান। মাঝের দেরিটা অবশ্য মেক-আপ করা যায়নি।

    কিন্তু ককপিটে বসে বছর তিরিশের দুই পাইলট ঘুমিয়ে পড়েন কী করে? দুই পাইলটকেই আপাতত সাসপেন্ড করেছেন উড়ান কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, আগের দিন টানা প্লেন চালানোর পরে পর্যাপ্ত ঘুম হয়নি মেইন পাইলটের। আর তা ছাড়া তিনি যে হেতু সহকারীকে জানিয়েই বিশ্রামে গিয়েছিলেন, তাই তাঁকে সে ভাবে দোষ দেওয়ায় যায় না। কিন্তু পাইলট-ইন-কম্যান্ড ঘুমোচ্ছে জেনেও সেকেন্ড পাইলট কী ভাবে ঘুমিয়ে পড়লেন? তাঁরও নাকি ঘুমের অভাব। মাসখানেক আগে যমজ সন্তান এসেছে ঘরে। স্ত্রীর সঙ্গে হলেও সংসার সামলাতে আক্ষরিক অর্থেই ঘুম ছুটেছে তাঁর। এমনটা অবশ্য অস্বাভাবিক নয়।

    সমীক্ষা বলছে, ককপিটে বসে বিমান চালাতে চালাতে ঢুলুনি আসে মোটামুটি ৯৫ শতাংশ পাইলটের। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশের প্রচণ্ড ঘুম পায়। এমনকী, ককপিটে প্রায়ই ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস আছে ৬৬ শতাংশ পাইলটের। সেফটি ম্যাটার্স ফাউন্ডেশন নামে ভারতীয় এনজিও-র সমীক্ষা মূলত ভারতীয় পাইলটদের নিয়ে হলেও গোটা বিশ্বে ছবিটা মোটামুটি একই বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। তাই পাইলটদের ক্লান্তি, ঘুমের অভাব ইত্যাদি কী ভাবে ট্যাকল করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বত্রই।
  • Link to this news (এই সময়)