Lok Sabha Election 2024 : দরজা খোলাই, এখনও জোটের আশায় 'হাত'
এই সময় | ১১ মার্চ ২০২৪
এই সময়: বঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের আশা এখনও আছে ‘হাতে’র? রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে জোড়াফুলের প্রার্থীর নাম ঘোষিত হলেও কংগ্রেস হাইকম্যান্ড বাংলায় জোটের সম্ভাবনা সম্পূর্ণ খারিজ করছে না। লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট এখনও ঘোষিত হয়নি।তাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে পর্যন্ত আলোচনার দরজা খোলাই রয়েছে বলে এআইসিসি নেতৃত্ব মনে করছেন। যদিও মমতা রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে ফের খোলাখুলি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পাশাপাশি বাম-কংগ্রেসের সঙ্গেও জোড়াফুল লড়াই করবে।
এদিন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কথা একবারও উল্লেখ না-করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘এখানে তৃণমূল বনাম বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের লড়াই হবে। তৃণমূল বাংলায় একাই লড়াই করবে। অসমেও লড়াই করবে। উত্তরপ্রদেশেও লড়াই করবে। উত্তরপ্রদেশে একটি আসনে অখিলেশ যাদবের সঙ্গে কথা হয়েছে। মেঘালয়ে তৃণমূল বিরোধী দল। আমরা মেঘালয়েও লড়াই করব।’
তাৎপর্যপূর্ণভাবে তাঁর সংযোজন, ‘দেশ কোন পথে চলবে, তৃণমূল ঠিক করবে। বাংলা ঠিক করবে। বাংলা দিশা দেখাবে, বাংলা পথে দেখাবে।’ মেঘালয়ে তৃণমূলের দুই নেতা মুকুল সাংমা ও চার্লস পিনগ্রোপ এ দিন ব্রিগেডের সভায় উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূল মেঘালয়ে একটি লোকসভা আসনে প্রার্থী দিতে পারে। এছাড়া অসমে দু’টি লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থী দেবে বলে মমতা আগেই জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, মেঘালয়ে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের মুখোমুখি লড়াই হতে চলেছে। এদিন তৃণমূল বাংলার ৪২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘আমরা সব সময়ে দরজা খোলা রেখেছি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত জোটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের কথায়, ‘তৃণমূলের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে আমরা সম্মানজনক সমঝোতা চেয়েছিলাম। সম্মানজনক জোট মানে দু’পক্ষের মধ্যে কম্প্রোমাইজ় করা। আসন আদান-প্রদান করা। আমরা সব সময়ে বলেছিলাম, দরজা খোলা রয়েছে। কিন্তু তৃণমূল একতরফা প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আমি জানি না, তৃণমূলের উপরে কী চাপ রয়েছে।’
কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব কিছুটা নমনীয় ঢংয়ে তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে মন্তব্য করলেও জোড়াফুল নেতৃত্ব বহরমপুরে ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী সরাসরি মমতার সমালোচনা করেছেন। বহরমপুরে অধীর এদিন বলেন, ‘বিজেপিকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্যই ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করা হয়েছে। ওঁর (মমতা) মূল লক্ষ্য, কংগ্রেসকে হারানো।
উনি যদি ইউসুফ পাঠানকে সম্মান জানাতে তাঁকে সংসদে পাঠাতে চান, তা হলে ইন্ডিয়া জোটে উনি গুজরাটে আসন চাইতে পারতেন। ওঁকে রাজ্যসভাতেও পাঠাতে পারতেন।’ যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব অধীরকেই বিজেপি-র এজেন্ট বলে মনে করেন। তৃণমূল রাজ্যের ৪২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট সম্ভাবনা আরও বাড়ল বলে প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশ মনে করছেন।
কারণ, এআইসিসি এরপর পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে বলে বিধানভবনের নেতাদের পর্যবেক্ষণ। কংগ্রেসের সঙ্গে দ্রুত সিট-শেয়ারিং নিয়ে কথা বলতে চাইছে বামেরাও। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এদিন বলেন, ‘কংগ্রেস এবং আইএসএফের সঙ্গে কথা চলছে। এর দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী সমস্ত শক্তিকে আমরা একত্র করতে চাইছে। ধৈর্য ধরে এই ঐক্য গড়তে চাইছি।’