এই সময়: এখনও ডেঙ্গি সে ভাবে মাথাচাড়া দেয়নি। অন্তত গত বছরের মতো তো নয়ই। চলতি বছরের শুরু থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত বৃহত্তর কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ১২৭ জন। গতবার ওই একই সময়কালে যে সংখ্যাটা ছিল ২০৪ জন বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর। এ থেকেই স্পষ্ট, গতবারের তুলনায় এবার শহরে ডেঙ্গি সংক্রমণের হার এখনও পর্যন্ত তুলনায় কম।যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন সংক্রমণ কম দেখে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, ডেঙ্গির মরশুম মূলত শুরু হয় সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে। ওই সময়ে যাতে সংক্রমণ কম থাকে, সে জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
সাধারণত বৃষ্টি কমলে কমতে থাকে ডেঙ্গির প্রকোপ। সে কারণেই মার্চ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, জানুয়ারিতে কলকাতা ছাড়া লাগোয়া সব পুরসভাতেই নতুন করে ডেঙ্গির প্রকোপ সে ভাবে বাড়েনি। বিধাননগরে মাত্র এক জন, দক্ষিণ দমদমে দু’জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন।
কামারহাটি, বরাহনগর, উত্তর দমদম, দমদম পুর এলাকায় নতুন করে আক্রান্তের খবর নেই জানুয়ারিতে। এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গিবদ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘এটা ঠিক যে, তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির নীচে নামলে মশার বংশবৃদ্ধি অনেকটাই কমে। তবে কলকাতার যা পরিস্থিতি, তাতে বছরভর ডেঙ্গি হচ্ছে।
কারণ, কলকাতার বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ছে।’ পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা জানাচ্ছেন, এখন যাঁরা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের ৯৫ শতাংশের বাড়ির ফ্রিজের ট্রে কিংবা ছাদে রাখা অব্যবহৃত ফুলের টবে জমা জল মিলেছে। পুরকর্তাদের আর্জি, ডেঙ্গি থেকে বাঁচতে সারা বছরই সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, কলকাতার যা আবহাওয়া, তাতে সারা বছরই ডেঙ্গির সম্ভাবনা রয়েছে।
গত পাঁচ বছরের তুলনায় ২০২৩-এ কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন সবচেয়ে বেশি। সে কারণেই চলতি বছরের শুরু থেকেই মশা-দমন কর্মসূচিতে যাতে গাফিলতি না হয়, সে ব্যাপারে সব বরোর স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। এলাকা সাফাইয়ের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রচারে যাতে খামতি না থাকে, সে পরামর্শও দিচ্ছে পুরসভা। এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি ঠিক বলেই জানাচ্ছেন পতঙ্গবিদ গৌতম চন্দ্র।
তাঁর কথায়, ‘বছরভর নজরদারি চালালে মানুষকে সচেতন করা যায়। এর ফলে সংক্রমণও কমানো যাবে।’ কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তা জানান, গত বছর যে যে জায়গায় রোগের প্রকোপ ছিল বেশি, সেখানে এবার বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এ বছর সংক্রমণ কমবে।