এই সময়, কোচবিহার: সুস্বাদু-রসালো। দেখতে লিচুর মতো। নাম রামবুটান। উত্তরবঙ্গের মাটিতে এই চাষ করে বিকল্প আয়ের পথ দেখাচ্ছেন তুফানগঞ্জের ব্যবসায়ী সমীর দত্ত। পেশায় ব্যবসায়ী হলেও নেশায় আপাদমস্তক চাষি। তাঁর বাড়িতে ১০টি রামবুটান গাছ আছে। দু’টি গাছে ফলন ভালো হয়েছে।যেহেতু সারাবছর এই গাছে ফল হয় সেক্ষেত্রে চাষিরা বিকল্প চাষ হিসেবে চাষ করলে লাভবান হতে পারেন বলে মনে করছেন জেলার হর্টিকলচার দপ্তরের আধিকারিকরা। মালয়েশিয়া ভাষায় রামবুটানের অর্থ চুল। ফলের পুরু খোসার উপরি ভাগ কদম ফুলের মতো দেখতে যা শত শত চুল দিয়ে আবৃত। এই কারণে এই ফলকে অনেক দাড়ি-লিচু বলে থাকেন।
কোচবিহার হর্টিকালচার দপ্তর সুত্রে জানা গিয়েছে, রামবুটান লিচু পরিবারের সদস্য। আদি নিবাস মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। তবে এদেশে কেরালায় ভালো চাষ হয়। রামবুটানের বৈজ্ঞানিক নাম নেফেলিয়াম লাপ্পাসিয়াম। এই ফলের প্রতি কেজি প্রায় পাঁচশো টাকা।
সারা বছর এই গাছ ফলন দিলেও গরমে বেশি ফল হয়। কোচবিহার জেলা হর্টিকালচারের ডেপুটি ডিরেক্টর বিপ্লব সরকার বলেন, ‘রামবুটান চাষ একেবারেই অভিনব৷ তুফানগঞ্জের সমীরবাবু সফলতা পেয়েছেন বলে শুনেছি। কেউ এই চাষে আগ্রহ দেখালে সরকারি প্রকল্পের আওতায় চারা দেওয়া হবে৷ বাণিজ্যিক ভাবে এই ফলের চাষ করা যেতে পারে৷ তাতে বাড়তি আয়ের সম্ভাবনা আছে।’
রামবুটান ফলে কদম ফুলের মতো খোসায় থাকে চুল বা কাঁটা। ভেতরের অংশ দেখতে একেবারেই লিচুর মতো। এর আকৃতি মাঝারি ধরনের৷ এই ফল যখন কাঁচা থাকে তখন বাইরের রং সবুজ এবং পাকলে লাল বা গোলাপী হয়। ফলটি লিচুর মতো রসালো মিষ্টি। হর্টিকালচার দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
হজমে ও চোখের সমস্যা মেটাতে এর ভূমিকা রয়েছে। গাছ লাগানোর তিন-চার বছরের মধ্যে ফল দেওয়া শুরু হয়। তুফানগঞ্জের ব্যবসায়ী সমীর দত্ত বলেন, ‘কৃষি দপ্তর শুধু নয়, কেউ আগ্রহী হলে চাষের ব্যাপারে সাহায্য করবেন। বাণিজ্যিক ভাবে এই ফল চাষ করে অনেকেই বাড়তি আয় করার সুযোগ পাবেন। একটি গাছে অসংখ্য ফল হয়৷ যে সব বিদেশি ফল এ দেশে লাভজনক হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তার মধ্যে রামবুটান অন্যতম।’