প্লেনের মালিক এই শহরের বাসিন্দারা! কোথায় প্রতি বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকে ব্যক্তিগত উড়ান?
এই সময় | ১১ মার্চ ২০২৪
খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহকার্য উপাদান। আর এসবের পরে আসে শখ পূরণ। ছোট ছোট শখ পূরণের চাহিদা কম-বেশি সকলেরই থাকে। মধ্যবিত্তের স্বপ্ন থাকে একটা নিজস্ব গাড়ির। জীবনের প্রাথমিক চাহিদাগুলো পূরণ হলে তবেই শখ পূরণের দিকেই পা বাড়ানো যায়। কোনও শখ পূরণ হয় আবার কোনওটা থেকে যায় অধরাই। তবে শখ যদি হয় ব্যক্তিগত প্লেন থাকা? একটু বেশি বাড়াবাড়ি বলে মনে হচ্ছে না তাই না? দেশের খুব কম মানুষ বা বলা ভালো অতি ধনী যাঁরা তাঁদেরই একমাত্র রয়েছে ব্যক্তিগত প্লেন। তাও সকলের নয়, হাতে গোনা সেই সংখ্যা। এছাড়া ব্যক্তিগত প্লেন থাকার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারেন না আমজনতা। অনেকের তো সারা জীবনের একবার প্লেনে চড়ার মতো সামর্থও হয় না ভাড়ার জন্য। তবে জানেন কি এই পৃথিবীর বুকেই রয়েছে এমন এক শহর, যেখানকার প্রায় প্রতিটি মানুষই তাঁদের ব্যক্তিগত কাজ ও ব্যবসার জন্য নিজেদের ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহার করেন?মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ক্য়ামেরন এয়ারপার্ক নাম এক ছোট্ট শহর। সেই শহরে প্রতিটি রাস্তায় গাড়ির বদলে দেখা মেলে বিমানের। সবই ব্যক্তিগত বিমান। বেশির ভাগ বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে থাকে প্লেন। এই শহরের বেশিরভাগ মানুষই নিজেদের দৈনিন্দিন কাজে ব্য়ক্তিগত বিমান ব্যবহার করেন। রাস্তায় গাড়ি ছুটিয়ে নয় বরং আকাশে বিমান উড়িয়ে যান কাজে। এই শহরে রয়েছে প্রায় ১০০টিরও বেশি বাড়ি। বেশিরভাগ বাড়ির সামনে গেলেই দেখা যাবে একটা করে বিমান দাঁড়িয়ে রয়েছে। এখানকার অধিকাংশ মানুষ ব্যক্তিগত কাজ বা ব্যবসার কাজে ব্যবহার করেন নিজেদের ব্যক্তিগত বিমান।
এই শহরের বাসিন্দারা 'রেসিডেন্সিয়াল থ্রু দ্য ফেন্স' ব্যবহার করেন। যেখানে একই সঙ্গে চলতে পারে গাড়ি ও বিমান। যেহেতু এই শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দার ব্যক্তিগত বিমান রয়েছে তাই এখানকার রাস্তাগুলোও মানানসাই। প্রতিটি রাস্তাই প্রায় ১০০ ফুট চওড়া। যাতে এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ি পর্যন্ত সহজেই প্লেন নিয়ে যাতায়াত করা যায়। একই সঙ্গে যাতে গাড়ি ও বিমান চলাচল করতে পারে সেই কারণে এই শহরের রাস্তাগুলি অন্য়ান্য রানওয়ের থেকেও চওড়া বানানো হয়েছে। পাশাপাশি এই শহরের সাইনবোর্ড ও মেলবক্সগুলি অনেক নীচু করে বানানো হয়েছে যাতে সহজে প্লেন চলাচল করতে পারে। শহরের প্রতিটি রাস্তার নাম রাখা হয়েছে বিমানের সঙ্গে মিলিয়ে, যেমন বোয়িং রোড। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হল অনুমতি ছাড়া এই শহরে থাকা নিষেধ। যদি এখানকার বাসিন্দারা কাউকে আমন্ত্রণ জানান তবেই তাঁরা এখানে আসতে পারেন। এই শহরের বেশিরভাগ মানুষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে অন্য কারও বাড়ি যাওয়া, অফিস যাওয়া বা অন্য কোনও বাড়ি যাওয়া, অফিস যাওয়া বা অন্য কোনও কাজে যাওয়ার জন্য নিজের বিমান ব্যবহার করেন। এই এলাকার বাসিন্দারা প্রাক্তন সেনাকর্মীরাই। তাঁরা বিমান চালানোয় পারদর্শী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই এলাকা যুদ্ধবিমান ওঠানামার জন্য ব্যবহার করা হত। সেই ধারা আজও বজায় রয়েছে তবে তা অবশ্য নিজস্ব কাজের জন্য। আর এই শহরের এমন বৈশিষ্ট্য গোটা বিশ্বের মধ্যে নজরকাড়া।