এই সময়, কালনা: বিভিন্ন ধরনের পুরাতাত্ত্বিক দ্রষ্টব্য ছড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন শহর কালনার আনাচে-কানাচে। এবার সেই শহরের ইতিহাস তুলে ধরতে ইতিহাস মেলার আয়োজন করল কালনা মহকুমা ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চা কেন্দ্র। রবিবার কালনার রাজবাড়ি চত্বর লাগোয়া নেতাজি সাংস্কৃতিক সংস্থার মাঠে আয়োজিত মেলা ঘিরে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।প্রাচীন পুঁথি, মুদ্রা সমেত বিভিন্ন দ্রষ্টব্যের প্রদর্শনীতে সাজানো হয়েছিল মেলার স্টল। কাঠ ও হস্তশিল্পের প্রদর্শনীর পাশাপাশি আয়োজন করা হয় সেমিনারের। কালনা শহরে রয়েছে ১০৮ শিবমন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির, লালজি মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্রের মন্দির সমেত বেশ কিছু পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন। রয়েছে হাবসি আমলের মসজিদও।
আবার কালনাতেই রয়েছে বর্ধমান রাজ পরিবারের কয়েকজন সদস্যের সমাধিস্থল সমাজবাড়ি। সেই সব নির্দশন ঘিরে রয়েছে অনেক কাহিনী। তার কিছুটা জানা, আর অনেকটাই অজানা। ইতিহাস মেলায় সেমিনারে সেই সব কাহিনী তুলে ধরেন বক্তারা।
মেলার যুগ্ম সম্পাদক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যের খুব কম জায়গাতেই এই মেলা হয়। মুর্শিদাবাদ, কাঁথিতে আয়োজন করা হয় এমন মেলার। এলাকার ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে তুলে ধরাই এই মেলার উদ্দেশ্য। মেলায় ইতিহাসকেন্দ্রিক বইয়ের স্টল রয়েছে। মেলার চারদিক কালনার পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের ছবির ফ্লেক্স দিয়ে সাজানো হয়েছে। বসে আঁকো প্রতিযোগিতায় কালনার মন্দির ও মন্দিরের টেরাকোটার কাজ নিয়ে আঁকতে হবে।’
মেলায় সংগৃহীত প্রাচীন দ্রষ্টব্যের স্টল দিয়েছেন রূপম আলি। তিনি বলেন, ‘যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন থেকে প্রাচীন এই সমস্ত জিনিস সংগ্রহ শুরু করেছি। তখন বয়স ছিল ৭। এখন ৩৮। ৩১ বছর ধরে নানারকম জিনিস সংগ্রহ করেছি। কোনওটি ২০০ বছর কোনওটি আবার তার থেকেও পুরোনো। ব্রিটিশ আমলের মুদ্রা, নোট, তারও আগের রুপোর চা বানানোর বাসনপত্র, বন্দুক ইত্যাদি সংগ্রহে রয়েছে। কিছু নিলামে কেনা, কিছু সংগ্রহের। এই মেলার মাধ্যমে সেইসব সংগৃহীত জিনিস সকলকে দেখাতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’