• CAA Act: সিএএ-এনআরসি-তে মিল বেশি নাকি দুইয়ে বিস্তর ফারাক? জানুন
    এই সময় | ১২ মার্চ ২০২৪
  • লোকসভা ভোটের আগে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। দেশজুড়ে কার্যকর হল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। সিএএ পাশের প্রায় চার বছর পর বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্র। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নে এদেশে আশ্রয় নিতে চান বা নিয়ে থাকেন তাহলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত। ২০১৯ সালে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিলে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী প্রতিবাদ। বিশেষ করে সিএএ-এর সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (NRC-National Register of Citizens) সংযুক্তিকরণের বিরুদ্ধে পারদ চড়ে। এই আইন কোন শ্রেণীর উপর কী প্রভাব ফেলবে, দেশের মুসলিম নাগরিকরা কেন এই নিয়ে আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন তা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক হয়। সেই বিতর্কের আগুন এখনও ধিকিধিকি করে জ্বলছে। এনআরসি ও সিএএ সংযুক্তিকরণের বিষয়টি কী? একে অপরের সঙ্গে কি সম্পর্ক রয়েছে?NRC-এর তাৎপর্য কী?

    আগে জানতে হবে আপনার উপর NRC-এর তাৎপর্য কী? এটি অবশ্য নির্ভর করছে ব্যক্তি অসমের বাসিন্দা কিনা তার উপর। অসমে ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে নাগরিক পঞ্জিকরণ প্রক্রিয়া বা NRC। এটির সূচনা হয় ১৯৫১ সালে। সম্পূর্ণ হয় ২০১৯ সালে। অসমই একমাত্র রাজ্য যেখানে NRC গঠিত হয়েছে। উল্লেখ্য, দেশজোড়া এনআরসি-র কোনও আইনসিদ্ধ দৃষ্টান্ত এখনও নেই।

    ডিসেম্বর মাসে সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, দেশজুড়ে NRC প্রক্রিয়া চালু করার তোড়জোড় চলছে। তবে তিনি তখনই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সঙ্গে পার্থক্য করে NRC-এর। বুঝিয়ে দেন তফাৎ। বলেন, NRC-এর ক্ষেত্রে কোনও রকম ধর্মীয় বিধিনিষেধ থাকবে না। দেশজুড়ে NRC চালু করতে সরকার নতুন কোনও আইন আনবে তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে, পিআইবি (PIB)-এর তরফে বলা হয়েছে, এঠা মনে রাখা জরুরি রাষ্ট্রীয় স্তরে NRC শুরু করার কোনও ঘোষণা হয়নি।' শাহ বরাবর বলে এসেছেন NRC প্রক্রিয়া ভারতীয় নাগরিক ও অবৈধ অভিবাসীদের ফারাক কর দেবে।

    ২০১৩ সালে অসমে এনআরসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। অসমের ইতিহাসে বারংবার প্রশ্ন উঠেছে অভিবাসীদের আসা-যাওয়া ঘিরে। সেখানে প্রতিবাদ সিএএ-এর বিরুদ্ধে। এনআরসি-র বিরুদ্ধে নয়। আসাম এবং ভারত সরকার, অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (AASU), এবং অল আসাম গণ সংগ্রাম পরিষদের মধ্যে ১৯৮৫ সালে ছয় বছরের গণ আন্দোলনের শেষে স্বাক্ষরিত অসম চুক্তি অনুযায়ী, যদি অসমের কোও বাসিন্দা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে নিজের, অথবা পূর্বপুরুষের, বসবাসের প্রমাণ দিতে পারেন, তবে তিনি গণ্য হবেন ভারতী নাগরিক হিসেবে। সিএএ-এর দৌলতে NRC-এর সময়সীমা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪। CAA প্রযোজ্য শুধুমাত্র তিনটি দেশ থেকে আসা অ-মুসলিম অভিবাসীদের জন্য়।

    অসমের বাইরে NRC হলে কী কী নথি প্রয়োজন?

    PIB জানিয়েছে, যদি NRC বাস্তবায়িত হয় তার অর্থ এই নয় যে কাউকে ভারতীয় হওয়ার প্রমাণ দিতে হবে। ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করাতে অথবা আধার কার্ড করাতে আমরা যেমন পরিচয়পত্র জমা দিই সেই ধরনেই নথি জমা দিতে হবে যখন যেভাবে তা চালু হবে সেই অনুযায়ী। এক্ষেত্রে বাবা-মায়ের নামে বা তাঁদের দিয়ে কোনও রকম নথি জমা করার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। যদিও গ্রহণযোগ্য নথি সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত গৃহীত হয়নি বলে উল্লেখ। নথি হিসেবে জমা দিতে হতে পারে ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট, আধার, নানারকমের লাইসেন্স, বীমার কাগজ, বার্থ সার্টিফিকেট, স্কুল ফাইনালের সার্টিফিকেট, বাড়ি বা জমি সংক্রান্ত দলিল বা কোনও সরকারি আধিকারিকের জারি করা ওই ধরনের দলিল। কোনও ভারতীয়ের যাতে অনাবশ্যক হয়রানি না হয় তার জন্য নথি তালিকায় আরও কিছু জিনিসের সংযোজন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • Link to this news (এই সময়)