Krishnanagar Incident: ফেসবুক লাইভ করার পরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী
এই সময় | ১২ মার্চ ২০২৪
এই সময়, কৃষ্ণনগর: সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভের পরেই উদ্ধার হলো এক পরিযায়ী শ্রমিকের পোড়া দেহ। ঘরে পেট্রল ছিটিয়ে গ্যাস সিলিন্ডারের মুখ খুলে দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মনে করছে পুলিশ। ঠিক তার আগের মুহূর্তে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে কারও উদ্দেশে বলেন, ‘তোরাই করে খা। জমি-সম্পত্তি সবই দিয়ে গেলাম তোদের।’ সোমবার সকালে নদিয়ার মুরুটিয়া থানার দিঘলকান্দি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাগজিপাড়া গ্রামের ঘটনা।অনেক পরে দাউদাউ করা আগুন নিভিয়ে যখন ঘরে ঢোকা হয়, তখন পোড়া আসবাবের স্তূপ থেকে উদ্ধার করা সেই দেহ চেনার উপায় ছিল না। যুবকের নাম উত্তম বিশ্বাস (৩৯)। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক হলেও ভিনরাজ্যে অনেক টাকা খুইয়ে মাস চারেক আগে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছিলেন তিনি। ইদানীং টোটো চালিয়ে আয় করতেন। উত্তমরা তিন ভাই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইদানীং সব জমি নিজের নামে লিখিয়ে নেওয়ার জন্য বাবার কাছে দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। এই নিয়েই অশান্তি চলছিল পরিবারে। তারই জেরে আত্মহত্যা বলে মনে করছে পুলিশ।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা কাঞ্চন বিশ্বাস বলেন, ‘সকাল ন’টা নাগাদ নিজেদের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লাইভ করেছিলেন তিনি। সেটা তখনই হয়তো কারও নজরে আসেনি। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরে গ্রামের লোকজন দেখতে পান, দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে তাঁদের টিনের চালার গোটা বাড়িতে।’
মঙ্গলবার উত্তমদের বাড়িতে কালীপুজো ছিল। সেজন্য সোমবার তাঁর বাবা-মা এবং ভাইয়েরা মিলে গঙ্গা স্নানে গিয়েছিলেন।
বাড়িতে একা থাকার সুযোগে এই ঘটনা ঘটান উত্তম। তাঁর এক আত্মীয় শ্যামল বিশ্বাস বলেন, ‘ওরা তিন ভাই হলেও পারিবারিক সব জমি ওর নামেই লিখে দিতে হবে বলে বাবা-মায়ের উপরে চাপ দিচ্ছিল। ওর বাবা উদ্ধব বলেছিলেন, কালীপুজোর পরে তিন ছেলে এবং ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নিয়ে বসে এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু তার আগেই এমন ঘটনা ঘটিয়ে ফেলল উত্তম।’
ভিনরাজ্য থেকে গ্রামে ফেরার পরে উত্তম কিছুটা মানসিক অসুস্থ ছিলেন বলেও গ্রামের অনেকে মনে করছেন। বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যরা কেঁদে কুল পাচ্ছেন না। আপনজনকে হারিয়েছেন। ঘরবাড়ি পুড়ে গিয়ে নিঃসম্বল অবস্থা গোটা পরিবারের।