Lok Sabha Election 2024 : জোটে বাধা অধীরই, অভিযোগ তৃণমূলের
এই সময় | ১২ মার্চ ২০২৪
এই সময়: পশ্চিমবঙ্গে জোট না-হওয়ার জন্য অধীর চৌধুরীকেই কাঠগড়ায় তুলল তৃণমূল। ইউসুফ পাঠানকে গুজরাট থেকে বাংলায় নিয়ে এসে বহরমপুরে প্রার্থী করা নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছিলেন অধীর। তারও কড়া জবাব দিয়েছেন জোড়াফুল শিবিরের রাজ্যসভার সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়।রবিবার ব্রিগেডের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বাংলার ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অভিযোগ করেন, জোড়াফুল একতরফা ভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কোনও চাপের মুখে এই ঘোষণা কি না, সে প্রশ্নও তোলেন জয়রাম। তারপর সোমবার মুখ খুলল তৃণমূল।
তৃণমূল ভবনে এ দিন সুখেন্দুশেখর বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোট নিয়ে মমতা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী, তাদের প্রাধান্য দিয়ে জোটের আলোচনা দ্রুত শুরু করার কথাও বলা হয়েছিল। প্রথমে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে বলে আলোচনা হলো না। তারপরও গত তিন মাস ধরে কথা চলছিল। কিন্তু বিজেপি এবং সিপিএমের পরামর্শদাতা অধীর তৃণমূল নেতৃত্বকে নিয়ে নানা জঘন্য কথা বলতে থাকেন। অন্যদিকে, কংগ্রেসের নেতারা দিল্লিতে বলেন, তাঁরা আন্তরিক ভাবে জোট চাইছেন। এটা হাস্যকর।’
সুখেন্দুর সংযোজন, ‘এখন দু’টি কংগ্রেস রয়েছে — একটি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস, অন্যটি হলো অধীররঞ্জন চৌধুরী কংগ্রেস।’ ‘ইন্ডিয়া’ গঠনে মমতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া সত্ত্বেও অধীরের মুখে কংগ্রেস হাইকমান্ড লাগাম পরায়নি বলে তৃণমূল নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ। একদিকে অধীরের তৃণমূল-বিরোধী অবস্থান।
অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে সিপিএম নেতৃত্বের সম্পর্কও জোটের পথে অন্তরায় হয়েছে বলে মনে করছে জোড়াফুল শিবির।
ইউসুফ পাঠান নিয়ে অধীরের আক্রমণ প্রসঙ্গে সুখেন্দু বলেন, ‘ইউসুফ প্রার্থী হতেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির প্যানিক রিঅ্যাকশন শুরু হয়েছে। যখন মাথা খারাপ হয়ে যায়, তখন মানুষ প্রলাপ বকে। সংখ্যালঘু-সংঘ্যাগুরু বিভাজন করে যাতে ভোট বৈতরণী পার হওয়া যায়, উনি সেই চেষ্টা করছেন। সাম্প্রদায়িক তাস খেলার চেষ্টা করছেন।’
এ দিকে, ইউসুফ প্রার্থী হওয়ায় নির্দল প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর। জেলা তৃণমূলের একাংশ তাঁকে সমর্থন করছে বলেও দাবি ভরতপুরের বিধায়কের। তাঁর বক্তব্য, ‘তৃণমূলকে ২০ জন বিধায়ক দিয়েছে পিছিয়ে পড়া মুর্শিদাবাদ। অথচ জেলার মানুষকে প্রার্থী করার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এ জন্যই নির্দল হিসেবে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
নির্বাচনের সূচি ঘোষণা হলে মনোনয়ন দাখিল করবেন বলেও হুমায়ুন জানান। রবিবারের ‘জনগর্জন সভা’য় তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার পরেই জোড়াফুল নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন জয়রাম। তারপর অধীর আরও চড়া সুরে তৃণমূলকে আক্রমণ করেন।
বহরমপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমবার বলেন, ‘এই প্রার্থী তালিকা থেকে মোদীকে দিদির স্পষ্ট বার্তা - আপনার সঙ্গে পাঙ্গা নেব না। আমাকে হারানোর জন্য হাজার রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে, জানি। প্রশাসনিক রদবদল করা হয়েছে। একমাত্র লক্ষ্য অধীর চৌধুরীকে দুর্বল করা। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ করছি, আপনি আসুন বহরমপুরে। আমি লড়াই করতে চাই। হোক চ্যালেঞ্জ।’ অধীরের এই চ্যালেঞ্জকে ‘প্রলাপ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সুখেন্দুশেখর।