নয়াদিল্লি: চাইল্ড পর্নোগ্রাফি ডাউনলোড করাকে ‘অপরাধ’ বলে গ্রাহ্য করেনি মাদ্রাজ হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই রায় নিয়ে সোমবার প্রবল বিরক্তি প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। তামিলনাড়ু পুলিশ ও অভিযুক্তর নামে নোটিস জারি করেছে শীর্ষ আদালত।জানুয়ারির রায়ে হাইকোর্ট জানিয়েছিল, শিশু পর্নোগ্রাফি ডাউনলোড করাকে পকসো বা তথ্যপ্রযুক্তি আইনে (আইটি অ্যাক্ট) অপরাধ গণ্য করা যায় না। এ ক্ষেত্রে অন্য কাউকে প্রভাবিত বা প্ররোচিত না করে ব্যক্তিগত ভাবে কেউ সেই কনটেন্ট দেখেছেন। অভিযুক্ত যদি আপত্তিকর ছবি বা ভিডিয়ো জনসমক্ষে দেখান কিংবা অন্যদের পাঠান, তা হলে তা ক্রাইম।
আপত্তিকর ভিডিয়ো তৈরি, ছড়ানো বা প্রদর্শনে যুক্ত হলে তা পকসো বা আইটি অ্যাক্টে অপরাধ। কিন্তু কেউ যদি চাইল্ড পর্নোগ্রাফি ডাউনলোড করে দেখেন, তার বেশি কিছু না করেন, তা হলে আইটি অ্যাক্টে সেটা অপরাধ নয়। এই যুক্তিতে বছর ২৮-এর অভিযুক্তর নামে মামলাও খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।
পাশাপাশি অবশ্য কিছু পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শও শুনিয়েছিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। এখনকার শিশুদের পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আদালত জানিয়েছিল, ভবিষ্যতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। অভিযুক্ত তরুণকেও সুস্থ ও আনন্দদায়ক ভবিষ্যতের স্বার্থে কাউন্সেলিংয়ের পরামর্শ দিয়েছিল আদালত।
মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায় আইনের পরিপন্থী বলে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে দু’টি সংস্থা। সোমবার প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ আবেদনকারীদের তরফে সিনিয়র অ্যাডভোকেট এইচ এস ফুলকা বক্তব্য পেশ করেন। সব শুনে চিফ জাস্টিস চন্দ্রচূড় বলেন, ‘হাইকোর্টের জাজমেন্ট খুব খারাপ (অ্যাট্রোশাস)। সিঙ্গল জাজ এ কথা কী ভাবে বলতে পারেন?’ এই প্রশ্ন তুলেই নোটিস জারি করে তিন সপ্তাহে সংশ্লিষ্টদের জবাব চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
গত বছর অক্টোবরে চাইল্ড পর্ন নিয়ে এক্স, ইউটিউব এবং টেলিগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে নোটিস পাঠিয়ে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় সরকারও। চাইল্ড পর্ন সংক্রান্ত সমস্ত কনটেন্ট প্ল্যাটফর্ম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র। অন্যথায় ওই প্ল্যাটফর্মগুলি আইনি রক্ষাকবচ হারাবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, এ ধরনের কনটেন্ট তৈরি ও ছড়ানোর বিপুল নেটওয়ার্ক রয়েছে ইনস্টাগ্রামে। তার পরেই জারি হয় কেন্দ্রের ওই নির্দেশিকা।