সকলের মনস্কামনা পূর্ণ করেন ‘মা আনন্দময়ী’, রামনগরের জাগ্রত মন্দিরের নতুন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
এই সময় | ১২ মার্চ ২০২৪
মায়ের কাছে কিছু প্রার্থনা করলে, তিনি সেই মনস্কামনা পূরণ করেন। ‘মা আনন্দময়ী’ মন্দির এবার সংস্কারের পথে। দিঘা যাওয়ার পথে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের আদলে বটতলা আনন্দময়ী শ্যামামায়ের মন্দিরের কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন শুরু।পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর বিধানসভার উত্তর রামনগর বটতলায় বছর ৯৬ আগে রামনগর থানার বটতলায় শক্তিদেবীর আরাধনা শুরু করেছিলেন পাঁচ উৎসাহী যুবক। ধূ-ধূ বালিয়াড়ির মাঝখানে বটতলায় খড়ের চালা বানিয়ে শ্যামামূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন তাঁরা। কথিত আছে, বটতলার এই শ্যামা মায়ের কাছে ভক্তিভরে কোনও নিবেদন রাখলেই তা পূর্ণ হত। ধীরে-ধীরে, দিকে-দিকে কল্পতরু শ্যামামায়ের কাহিনী ছড়িয়ে পড়ে।
‘মা আনন্দময়ী’ নামে তাঁকে ডাকতে শুরু করেন ভক্তজনেরা। এই ভাবেই ব্রজমোহন বড়পণ্ডা, তারিণীপ্রসাদ দাস মহাপাত্র, কাঙালীচরণ বড়পণ্ডা, গিরীশচন্দ্র বড়পণ্ডা, জিতেন্দ্রনাথ মহাপাত্রের পুজো ক্রমে সর্বজনীন পুজোর চেহারা নেয়। কৃপাধন্য ভক্তেরা ইতিমধ্যেই মা আনন্দময়ীর জন্য সুদৃশ্য পাকা-মন্দির করে দিয়েছিলেন। মা আজ আপাদমস্তক স্বর্ণালঙ্কারে ভূষিতা। স্থানীয় গ্রামবাসীরা মায়ের নামে গ্রামের একমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামকরণও করেছেন।
মন্দিরের পাশাপাশি এলাকাবাসী, মায়ের কাছে মানত রাখলে মনোবাসনা পূরন হয়। তাই দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ পুজোর সময় আসেন। পুজোর পাশাপাশি মন্দিরের উন্নতিকল্পেও নিয়মিত অর্থ দান করেন ভক্তেরা। কিন্তু সেই নির্মিত মন্দির এখনও প্রায় ভগ্ন, সেই ভগ্নপ্রায় মন্দিরটিতে বৃষ্টি হলেই আনন্দময়ী মায়ের মূর্তির উপর জল পড়ে। বিভিন্ন অসুবিধার মধ্যে ও আনন্দময়ী কালী মাকে থাকতে হয়। অবশেষে বহু বছর কেটে গেল বহু প্রতীক্ষার পরে আজকে এর অবসান হল। সেই মন্দিরের পিছনে নতুন মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হল।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আনন্দময়ী শ্যামা পূজা কমিটির সভাপতি ও তমাল তরু দাস মহাপাত্র, উপস্থিত ছিলেন পাশের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হৃষিকেশ দাস, উপস্থিত ছিলেন মানিকাবসান হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার পাল, কাদুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান রথীকান্ত দাস, বিমল, দিপু, চিত্তরঞ্জন মাইতি, শুভাশিস, প্রশান্ত মাইতি, সুভাষ মাইতি, বিশিষ্ট সমাজসেবী নিল্লিপ্ত মাইতি সহ অন্যান্য ব্যক্তিগণ।
পূজা কমিটির সভাপতি তমাল তরু দাস মহাপাত্র জানান, ১৯৩৬ সালে এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল যদিও মূল মন্দির বহু পুরানো খুব প্রাচীন মা আনন্দময়ী কালী। আমাদের এখানকার যতগুলো প্রতিষ্ঠান মা আনন্দময়ীর নামেই নামাঙ্কিত, আমাদের পূর্বপুরুষরা এই মায়ের স্থাপন করেছিলেন, আগে ছিল ধু ধূ বালিয়াড়ি রাত্রে যেসব পথিকেরা এ পাশ দিয়ে যেতেন তারা দেখতেন আলোর কিছু ঝলক দেখতেন, তারা ভাবতেন এখানে মা তারার আগমনী হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে আগুন দেখা যেত না। সেই জিনিস দেখে এলাকার মানুষজন মা আনন্দময়ীকে প্রতিষ্ঠাতা করে ছিলেন, এতক্ষণ ছিল মাটির চালা ঘর। পরবর্তীকালে কলকাতার একজন ব্যবসায়ী এখানে মন্দিরটা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে উৎসাহী হন অনেকে মিলে এই মন্দিরটা স্থাপন করেছিলেন। আমরা পুনরায় নতুন করে মন্দির প্রতিষ্ঠা করা চেষ্টা করছি আজকে তার শুভ সূচনা হল।